পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু

 প্রসারিত ফুলস্কেপটিতে লিখিত হইল, আমি তো তাঁকে চিনি না, তবে এইখানে একজন লেডি দাঁড়িয়ে আছেন এবং ঐ ভদ্রলোকের দিকে চেয়ে চেয়ে হাসছেন;—হতে পারে তিনিই ওঁর স্ত্রী।”

 “আপনি প্রশ্ন করুন—”

 চন্দ্রকুমার দু’তিনবারের চেষ্টার পর গলা সাফ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন:

 “সুকু? এসেছ?”—

 উত্তর হইল, “অনেকক্ষণ! আমি তো তোমার সঙ্গে সঙ্গেই থাকি।”

 চন্দ্রকুমাবের চোখ দুইটা তার চশমার পরকলার মধ্য দিয়া চকচকে হইয়া উঠিল, আনন্দস্মিত মুখে তিনি কহিয়া উঠিলেন, “সত্যি থাকো? সমস্তক্ষণ? তবে আমায় দেখা দাও না কেন?”

 উত্তর হইল, “কি মজার কথাই বল্লে! দেখা দিই, আর তুমি ভূত দেখেছ বলে চেঁচিয়ে লোক জড়ো করো আর কি! রোজা ডেকে আমায় সরযে-পড়া খাওয়াও।”

 চন্দ্রকুমারের সেই উজ্জ্বল দৃষ্টি সলিলার্দ্রতায় ঝাপসা হইয়া গেল, তিনি সক্ষোভে উচ্চারণ করিলেন, “আমায় তুমি তাই ভাবো!”

 “হয়েছে, আর রাগ করতে হবে না, আচ্ছা, অমন দশা করে থাকো কেন?”

 “কেমন দশা?”

 “বাঃ জানো না যেন! নাপিতকে ধোপাকে ভাতে মেবে দর্জ্জিকে বয়কট করে, কিম্ভূতকিমাকার মূর্ত্তি হয়ে, ও সব কি হচ্ছে?”

 চন্দ্রকুমার একটা প্রচণ্ড দীর্ঘশ্বাসে যেন সমস্ত মনটাকে একমুহূর্ত্তে হাল্কা করিয়া ফেলিলেন, তাঁর সমুদয় আত্মত্যাগ তা’ হইলে সার্থকতা