পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সাত

 নিতান্ত অল্প বয়সেই সুদর্শনার বিবাহ হইয়া গেল। তার দাদুর একান্ত অনিচ্ছায় রোগাটে ও রুগ্ন এবং সংসার-অনভিজ্ঞা এই তাঁর একান্ত প্রিয়পাত্রীটিকে এত শীঘ্র পরের ভাগ্যে সঁপিয়া দিতে তাঁর গভীর স্নেহ-হিতৈষণাভরা চিত্ত ভালমতে সায় না দিলেও বৎসর তিনেক শ্বশুরঘর করিতে না পাঠানোর কড়ারে ছেলেটির রূপ, গুণ ও চরিত্রের বিশেষ রূপ খ্যাতি শুনিয়া তাঁহাকে সম্মত হইতে হইল। সুজাতা এখন প্রায়ই শ্বশুরবাড়ী যাতায়াত করে। আর একটি খোকা কোলে পাইয়াছে। ছেলেটিকে অবশ্য অর্দ্ধেক দখল করিয়াছে সুদর্শনাই। গভীর স্নেহে মাসিমা তাহাকে দিয়া সন্তান-স্নেহের রসাস্বাদন করিতেছিল, তা এ-যে তাদের জন্মগত অধিকার! যতই সংসার-অনাসক্ত কাব্যিক-মনই হোক, তবু তাদের এ সহজাত-ধর্ম্ম, বাহিরে যাই থাক, ভিতরে জাগ্রত আছেন যে অনাদি জননী। সমবয়সী একটি বোনের বিবাহ দেখিয়া তার একবারটির জন্য বিবাহের সাধ মনে জাগিয়াছিল, কিন্তু শ্বশুরবাড়ী যাওয়া দেখিয়া সখ মিটিয়া গিয়াছিল। নিজের বিবাহের কথা শুনিয়া ভয়ে ভাবনায় শুষ্ক মুখে একা পাইয়া দাদুকে গিয়া বলিল, “আমায় কেন বিয়ে দেবেন দাদু? আপনি যে বলেছিলেন, ঋষিকুমারীদের মতন পৈতে দিয়ে বেদ পড়াবেন আমাকে।”

 দাদু উত্তর দিলেন হাস্যমুখেই, কিন্তু কয়েক মুহূর্ত্ত বিলম্বে বলিলেন, “ইচ্ছা করে, কিন্তু আমি আর কত দিনই বা বাঁচবো,—তখন তোমায় কে দেখবে? আরূঢ়-পতিত হয়ে যাবে যে। নাঃ, এ ভালই হবে। ছেলেটি খুব সৎ ও বিদ্বান, দুঃখ তুমি ওর হাতে পাবে না।”

 এই তো তার বেদবাক্য! দাদু যখন ‘ভাল’ বলিতেছেন, নিশ্চয়ই