৬২ খাদে ডাকাতি কোথা দিয়ে যেন ভোজবাজীর মত কী হ’য়ে গেল। কথায় যে কাজ হয়নি, শুধু ঐ নামের উচ্চারণেই সেই কাজ হ’য়ে গেল। জনতার সমস্ত লোক লাঠি, সড়কী ছুড়ে ফেলে শুধু চীৎকার করতে লাগলো—“মহিম | দাদাজান ! ..ভগবান ! খোদাতাল্লা ! এ কী করলে ! লড়াই থেমে গেল । মুমুঘু মহিম । তখন চৌচির হয়ে গেছে তার মাথা। রক্তবন্যা ব’য়ে মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছে । দু’দলের মাঝখানে সে শুয়ে ব’লতে লাগলো অতি ক্ষীণ স্বরে—“ভাই সব ! এ নশ্বর প্রাণের জন্য তোমরা দুঃখ ক’রো না ; আজ আমার মুখের মৃত্যু হবে, যদি শুধু আমার মৃত্যুশয্যায় আমি হিন্দুমুসলমান ভাইদের এক হ’তে দেখি । শুধু আমার মৃত্যুসময়ের অনুরোধ, যদি তোমরা আমায় সত্যিই ভালবেসে থাক, তবে আজ থেকে ঝগড়াবিবাদ ছেড়ে দু’দল ভাই ভাই হ’য়ে মিলে যাও ; তবেই অামার আত্মা শান্তি পাবে।” মহিমের গলার স্বর ক্ষীণ হ’তে ক্ষীণতর হয়ে এল। হিন্দুমুসলমান জনতার অশ্রুভরা ঝাপসা চোখের সামনে সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ ক’রে চোখ বুজলে । তারপর, চার পাঁচ বছর কেটে গেছে । আজি যদি তোমরা সেই গ্রামে যাও, তবে দেখতে পাবে “মহিম-বাধের” পাড়ে দু’টা গ্রামের একতার নিশান স্বরূপ মহিমের নাম খোদাই করা একখান। বড় চাংড়াপাথর জলের ওপর ছায়া ফেলে দাড়িয়ে আছে ; আজি তোমরা জাতিতে হিন্দুই হও বা মুসলমানই হও, ছ’ গ্রামের যে
পাতা:খাদে ডাকাতি - ধর্ম্মদাস মিত্র.pdf/৭০
অবয়ব