পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।

 শো। আজ্ঞে হাঁ প্রায় দুই সহস্র টাকার অলঙ্কার রূপসীর গাত্রে ছিল।

 আ। আপনার ভাবী জামাতার মুখে শুনিলাম, আপনার আর্ধিক অবস্থা বড় ভাল নহে। আপনি এত টাকার গহনা কোথায় পাইলেন?

 শো। আমার ভাবী জামাতা সত্য সত্যই বলিয়াছেন। আমি অত্যন্ত দরিদ্র। কিন্তু বিবাহের দুই দিন পুর্ব্বে আমার আত্মীয়গণ এখানে আসিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই ধনবানের পত্নী। তাঁহারাই জোর করিয়া তাঁহাদের অলঙ্কারগুলি রূপসীকে পরাইয়া দিয়াছিল। আমি এখন ধনে প্রাণে মারা গেলাম।

 আ। এ অঞ্চলে আপনার কেহ শত্রু আছে কি?

 শোভন সিং কিছুক্ষণ চিন্তা করিলেন। পরে বলিলেন, “আমারই এক আত্মীয় আমার ঘোর শত্রু ছিলেন। তাঁহারও নিবাস এই গ্রামে ছিল। কিন্তু এক বৎসর হইল, ভজন সিং কোথায় নিরুদ্দেশ হইয়া গিয়াছেন। শুনিয়াছিলাম, তিনি না কি সন্ন্যাসী হইয়া দেশে ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন।”

 আ। তাহা হইলে যে সন্ন্যাসী রূপসীকে খুন করিয়াছে সেই হয় ত ভজন সিং—আপনার পূর্ব্ব শত্রু। এতদিন কোনরূপ সুবিধা করিতে না পারায় আপনার উপর কোনরূপ প্রতিহিংসা লইতে পারে নাই। আজ আপনার কন্যার গাত্রে অনেক টাকার গহনা দেখিয়া কৌশলে সেই বুড়িকে পাঠাইয়া দিয়াছিল।

 শো। আপনার অনুমান সত্য হইলেও হইতে পারে।

 আ। আপনার আর কোন আত্মীয় আছে?

 শো। আত্মীয়ের মধ্যে আমার ভগ্নী—গৌরি তাহারই কন্যা।