পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।

 লোকটীর বয়স প্রায় পয়ত্রিশ বৎসর, দেখিতে অতি সুপুরুষ। বেশ হষ্টপুষ্ট দেহ। তাঁহার পরিধানে একখানি পাতলা দেশী কালাপেড়ে ধুতি, একটা আদ্ধির পিরাণ, একখানি মান্দ্রাজী জরিপেড়ে উড়ানি, মস্তকে একটা ফিরোজা রঙের পাগ,ড়ী, গলায় গিনি সোণার মোটা হার, কর্ণে হীরাবসান ফুল, হস্তে হীরার আংটী, পায়ে বার্ণিশ করা জুতা।

 কিছুদূর যাইতে না যাইতে তিনি অতি বিমর্ষভাবে বলিলেন, “মহাশয়, আমার সর্ব্বনাশ হইয়াছে। আমার ভাবী-পত্নীকে কে খুন করিয়াছে।”

 ভাবী পত্নীর কথা শুনিয়া আমি বিস্মিত হইলাম, তাঁহার মুখের দিকে একৃষ্টে চাহিয়া রহিলাম। তিনি আমার মনোগত ভাব বুঝিয়া বলিলেন, “দুই বৎসর হইল আমার প্রথমা স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তাঁহার মৃত্যুর দুই মাস পরে আমার একমাত্র পুত্ত্রও মারা পড়ে। মনে করিয়াছিলাম, আর সংসারে লিপ্ত হইব না; কিন্ত বিধিলিপি অখণ্ডনীয়। ভবানীপুর পদ্মপুকুর রোডে শোভন সিং নামে আমার একবন্ধু বাস করিতেন। আমি প্রায়ই তাঁহার বাড়ীতে যাতায়াত করিতাম। শোভন সিংএর অবস্থা বড় ভাল ছিল না। তাঁহার একটী কন্যা ছিল। মেয়েটীর বিবাহের বয়স উত্তীর্ণ হইলেও অর্থ-অভাবে তিনি বিবাহ দিতে পারেন নাই। কন্যার নাম রূপসী। তাহার বয়স প্রায় চৌদ্দবৎসর, দেখিতে বেশ সুন্দরী। একদিন কথায় কথায় শোভন সিং কন্যার বিবাহের কথা উত্থাপন করেন এবং আমাকে বিবাহ করিবার জন্য অত্যন্ত অনুরোধ করেন। রূপসী সুন্দরী যুবতী, ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমার, দু-পয়সার সঙ্গতিও আছে। আমিও পিতার একমাত্র সন্তান, বিবাহ না করিলে বংশ