পাতা:গড্‌ডলিকা - পরশুরাম (১৯২৪).pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভুশণ্ডীর মাঠে

একটু লেখাপড়া শিখিয়াছিল এবং বাপের কাছে সামান্য যেটুকু সংস্কৃত পড়িয়াছিল, তাহা সম্পত্তি এবং যজমানরক্ষার পক্ষে যথেষ্ট। কিন্তু শিবুর মনে সুখ ছিল না। তার স্ত্রী নৃত্যকালীর বয়স আন্দাজ পঁচিশ, আঁটো-সাঁটো মজবুত গড়ন, দুর্দ্দান্ত স্বভাব। স্বামীর প্রতি তার যত্নের ত্রুটি ছিল না, কিন্তু শিবু সে যত্নের মধ্যে রস খুঁজিয়া পাইত না। সামান্য খুঁটিনাটি লইয়া স্বামি-স্ত্রীতে তুমুল ঝগড়া বাধিত। পাঁচ মিনিট বকাবকির পরেই শিবুর দম ফুরাইয়া যাইত, কিন্তু নৃত্যকালীর রসনা একবার ছুটিতে আরম্ভ করিলে সহজে নিরস্ত হইত না। প্রতিবারে শিবুরই পরাজয় ঘটিত। স্ত্রীকে বশে রাখিতে না পারায় পাড়ার লোকে শিবুকে কাপুরুষ, ভেড়ো, মেনীমুখো প্রভৃতি আখ্যা দিয়াছিল। ঘরে বাহিরে এইরূপে লাঞ্ছিত হওয়ায় শিবুর অশান্তির সীমা ছিল না।

 একদিন নৃত্যকালী গুজব শুনিল তার স্বামীর চরিত্রদোষ ঘটিয়াছে। সেদিনকার বচসা চরমে পৌঁছিল,—নৃত্যকালীর ঝাঁটা শিবুর পৃষ্ঠ স্পর্শ করিল। শিবু বেচারা ক্রোধে, ক্ষোভে, কষ্টে চোখের জল রোধ করিয়া কোনোগতিকে রাত কাটাইয়া পরদিন ভোর ছ’টার ট্রেনে কলিকাতা যাত্রা করিল।

১২৫