পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

বিশারদগণ বলেন, এঁরা পুরোপলীয় অর্থাৎ প্রাচীন উপল যুগের লোক, চাষ করতে শেখেন নি, কাপড় পরতেন না, রাঁধতেন না, কাঁচা মাংস খেতেন, গুহায় বাস করতেন। ভেবে দেখুন, মোটে ৭২০ পুরুষে আমাদের কি আশ্চর্য উন্নাতি হয়েছে। আমাদের যেমন পঁচিশ বৎসরে, ইন্দূরোদ্ভব গামানুষদের তেমনি পনর দিনে এক পুরুষ, কারণ তারা জন্মাবার পনর দিন পরেই বংশরক্ষা করতে পারে। মানবজাতি ধ্বংস হবার পর যে ত্রিশ বৎসর অতিক্রান্ত হয়েছে সেই সময়ে গামানুষ জাতির ৭২০ পুরুষ জন্মেছে। অর্থাৎ গামানুষের ত্রিশ বৎসর আমাদের ১৮০০০ বৎসরের সমান। যদি সন্দেহ থাকে তবে অঙ্ক ক’ষে মিলিয়ে দেখতে পারেন।

 এই সুদীর্ঘ ত্রিশ বংসরে গামানুষ অতি দ্রুত গতিতে সভ্যতার শীর্ষদেশে উপস্থিত হয়েছে। পূর্বমানব যে বিদ্যা কলা আর ঐশ্বর্যের অহংকার করত গামানুষ তার সমস্তই পেয়েছে। অবশ্য তাদের সকল শাখাই সমান সভ্য আর পরাক্রান্ত হয় নি, তাদের মধ্যেও জাতিভেদ, সাদা-কালার ভেদ, রাজনীতির ভেদ, ছোট বড় রাষ্ট্র, সাম্রাজ্য, পরাধীন প্রজা, দ্বেষ-হিংসা এবং বাণিজ্যিক প্রতিযোগ আছে, যুদ্ধবিগ্রহও বিস্তর ঘটেছে। বার বার মারাত্মক সংঘর্ষের পর বিভিন্ন দেশের দূরদর্শী গামানুষদের মাথায় এই সুবুদ্ধি এল—ঝগড়ার দরকার ফি, আমরা সকলে একমত হয়ে কি শান্তিতে থাকতে পারি না? আমাদের বর্তমান সভ্যতার তুলনা নেই,