পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

সহজেই শত্রুতার অবসান হয়। বিরাট রাজা—আহা বেচারার দুই ছেলে আজ মারা গেল—কঙ্কবেশী যুধিষ্ঠিরকে পাশা ছুড়ে মেরেছিলেন, রক্তপাত করেছিলেন, কিন্তু যুধিষ্ঠির রাগ দেখান নি। বিরাট ভদ্রলোক, সেজন্য যুধিষ্ঠিরের অক্লোধে ফল হ’ল, ব্যাপারটা সহজেই মিটে গেল। আর দুর্যোধনকে দেখ। তার সহস্র অপরাধ আমাদের ধর্মরাজ ক্ষমা করেছেন, দুরাত্মাকে সুযোধন ব’লে আদর করেছেন, কিন্তু তার ফল কিছুই হয় নি। কারণ, দুর্যোধন ভদ্র নয়, স্বভাবত দুর্বৃত্ত। তার ভাইরা, শকুনি মামা, আর উচ্ছিষ্টভোজী সূতপত্র কর্ণও সমান নরাধম। ধর্মরাজের সহিষ্ণুতার ফলে এদের আস্পর্ধা বেড়ে গেছে। এই সব দেখেও কি তুমি বলবে যে অক্রোধ দ্বারা ক্রোধ জয় করতে হবে?

 কৃষ্ণ। ভীমসেন, আপনার যুক্তি যথার্থ। অক্রোধ দ্বারা সজ্জনকেই জয় করা যায়, কিন্তু দুর্জনকে জয় করবার জন্য ধর্মযুদ্ধ আবশ্যক। আপনারা সেই ধর্মযুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েছেন। ধর্মযুদ্ধে ক্রোধ ও প্রতিশোধের প্রবৃত্তি বর্জনীয়। যদি যুদ্ধই কর্তব্য হয় তবে রাগম্বেষ ত্যাগ ক’রে করতে হবে। এই কারণেই দুর্যোধনের অপরাধের কথা অর্জুনকে মনে করিয়ে দেওয়া আবশ্যক মনে করি নি।

 ভীম। প্রকাণ্ড ভুল করেছ। সোজা উপায় ছেড়ে দিয়ে বাঁকা পথে গেছ, ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েছ, দু ঘণ্টা ধ’রে তত্ত্বকথা শুনিয়ে অতি কষ্টে অর্জুনকে যুদ্ধে নামাতে

১১৬