কাকে বর্জন করবেন? অটলবাবু অস্পষ্টম্বরে বললেন, দূর হ, দূর হ।
নার্স কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলে, আমাকে ডাকছেন? অটলবাবু আবার বললেন, দূর হ, দূরে হ। নার্স বিরক্ত হয়ে তার চেয়ারে গিয়ে বসল এবং আবার ঢুলতে লাগল।
বিকারের ঘোর কাটিয়ে উঠে অটলবাবু ভাবতে লাগলেন —পুনর্জন্ম নয়, স্বর্গ নয়, স্পিরিচুয়াল প্রেতলোকও নয়। কোথায় যাবেন? মমৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে মিলিয়ে যায়, দেহের উপাদান পৃথিবীর জড় বস্তুতে লয় পায়। মৃত ব্যক্তির চেতনাও কি বিরাট বিশ্বচেতনায় লীন হয়? আমিই অটল চৌধুরী —এই বোধ কি তখনও থাকবে? অটলবাবু আর ভাবতে পারেন না, মাথার মধ্যে সব গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।
শেষ রাত্রে অটলবাবুর নাড়ী নিঃশ্বাস আর বুকে পরীক্ষা ক’রে ডাক্তার বললেন, ঘণ্টাখানেক হ’ল গেছেন। আশ্চর্য মাননুষ, হরিনাম নয়, রামধুন নয়, তারকব্রহ্মনাম নয়, কিছুই শুনলেন না, ভদ্রলোক লাভ-লোকসান কষতে কষতেই মরেছেন। বোধ হয় হিসেব মেলাতে পারেন নি, দেখুন না, ভ্রূ, একটু কুঁচকে রয়েছে।
পুত্রবধূ বললেন, তা বেশ গেছেন, নিজেও বেশী দিন ভোগেন নি, আমাদেরও ভোগান নি। চিকিৎসার খরচও তো কম নয়।
৩১