পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রাজভোগ

পৌ মাস, সন্ধ্যাবেলা। একটি প্রকাণ্ড মোটর ধর্মতলায় অ্যাংলোমোগলাই হোটেলের সামনে এসে দাঁড়াল। মোটরটি সেকেলে কিন্তু দামী। চালকের পাশ থেকে একজন চোপদার জাতীয় লোক নেমে পড়ল। তার হাতে আসাসোঁটা নেই বটে কিন্তু মাথায় একটি জরি দেওয়া জাঁকালো পাগড়ি আছে, তাতে রূপোর তকমা আঁটা; পরনে ইজেরচাপকান, কোমরে লাল মখমলের পেটি, তাতেও একটি চাপরাস আছে। লোকটি তার প্রকাণ্ড গোঁফে তা দিতে দিতে সগর্বে হোটেলে ঢুকে ম্যানেজারকে বললে, পাতিপুরকা রাজাবাহাদুর আয়ে হেঁ।

 ম্যানেজার রাইচরণ চক্রবর্তী শশব্যস্তে বেরিয়ে এল এবং মোটরের দরজার সামনে হাত জোড় করে নতশিরে বললে, মহারাজ, আজ কার মুখ দেখে উঠেছি! দয়া করে নেমে এই গরিবের কুটীরে পায়ের ধূলো দিতে আজ্ঞা হ’ক।

 পাতিপুরের রাজা বাহাদুর ধীরে ধীরে মোটর থেকে নামলেন। তাঁর বয়স সত্তর পেরিয়েছে, দেহ আর পাকা গোঁফ জোড়াটি খুব শীর্ণ, মাথায় যেটকু চুল বাকী আছে তাই দিয়ে টাক ঢেকে সিঁথি কাটবার চেষ্টা করেছেন। পরনে জরিপাড়

৩৩