পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শোনা কথা

 চৌধুরী। বেশ বেশ, ব’লে যান।

 মাষ্টার। স্বদেশী যুগের সন্ত্রাসকদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ তাড়ানো, বিদেশী শাসকরা চ’লে যাবার পর কি করতে হবে তা তারা ভাবে নি। উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য যেকোনও উপায়ে মানুষ মারা তারা পাপ মনে করত না। শ্রীকৃষ্ণ গীতায় অর্জুনকে ধর্মযুদ্ধের উপদেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু মহাভারতে অন্যর আড়াল থেকে বোমা মারতেও বলেছেন।

 ভরদ্বাজ। কোথায় আবার বললেন? যত সব বাজে কথা।

 মাষ্টার। দ্রোণবধের জন্য মিথ্যা বলা এবং দুর্যোধনের কোমরের নীচে গদাঘাত বোমারই শামিল। সাধারণ ধর্ম আর আপদ‍্ধর্ম এক নয়, আপৎকালে অনেকেই অল্পাধিক অধর্মাচরণ ক’রে থাকেন। সন্ত্রাসকরা তাই করেছিল। পরে মহাত্মা গান্ধী যখন যুদ্ধের নূতন উপায় আবিষ্কার করলেন এবং তাতে সিদ্ধিলাভের সম্ভাবনাও দেখা গেল তখন সন্ত্রাসকরা নিরম্ভ হ’ল। কিন্তু তারা হিংস্রতার জমি তৈরি ক’রে গেল, বহু লোকের ধারণা হ’ল যে রাজনীতিক উদ্দেশ্যে হিংস্র কর্মে দোষ হয় না, বরং তাতে বাহাদুরিও আছে। সাতচল্লিশ সালের দাঙ্গার সময় অনেক শান্ত শিষ্ট হিন্দুসন্তান অসংকোচে খুন করতে শিখল। তার পর মহাত্মাজীও নিহত হলেন। অনেক গণ্যমান্য লোক চুপি চুপি বললেন, ভগবান যা করেন ভালর জন্যই করেন। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে, মুক্তিকামীদের আদি উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু অন্য উদ্দেশ্য দেখা দিয়েছে

৮১