পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শোনা কথা

প্রজাতন্ত্র সমাজতন্ত্র সমভোগতন্ত্র সমস্তই অচল ও অনাবশ্যক। দিল্লিতে যে ভারতশাসনতন্ত্র রচিত হয়েছে তাতে কিছুই হবে না।

 মাষ্টার। কিরকম শাসনতন্ত্র চান আপনিই বলুন।

 ভরদ্বাজ। ধর্মরাজ্য চাই। প্রথমেই রাজার আশ্রয় নিতে হবে। প্রত্যেক প্রদেশে একজন উচ্চবংশীয় ক্ষত্রিয় রাজা থাকবেন, তাঁদের সকলের ওপরে একজন সার্বভৌম রাজচক্রবর্তী সম্রাট থাকবেন। প্রদেশে ও কেন্দ্রে কেবল বিদ্ধান সদব্রাহ্মণরা মন্ত্রী হবেন, তাঁরাই আইন করবেন, রাজ্য চালাবেন। প্রজাদের কোনও সভা থাকবে না, রাম শ্যাম যদুর খেয়াল অনুসারে রাজ্য চলতে পারে না, তাতে কেবল ঝগড়া হবে। রাজারা সনাতন বর্ণাশ্রম ধর্মের প্রতিষ্ঠা করবেন, মাঝে মাঝে যজ্ঞ ক’রে প্রজাদের ধর্মকর্মে উৎসাহ দেবেন। মন্দিরে মন্দিরে দেবতার পূজা হবে, শঙ্খ ঘণ্টা বাজবে, ধূপের ধূম উঠবে। রাষ্ট্রের লাঞ্ছন হবে গর‍ু বাঘ-সিংগি চলবে না। জাতীয় সংগীত হবে মোহমুদ‍্গর। ফাঁসি উঠে যাবে, পাপীদের শূলে দেওয়া হবে। অনাচারী নাস্তিক আর বিধর্মীরা রাজকার্য করবে না, তারা নগরের বাইরে বাস করবে।

 মাষ্টার। চমৎকার, যেন সত্যযুগের স্বপ্ন। আপনার এই ধর্মরাজ্যের সঙ্গে হিটলার-মুসোলিনির রাষ্ট্রের কিছু কিছু মিল আছে। শরিয়তী রাজ্য এবং গোঁড়া রোমান ক্যাথলিকদের আদর্শ খৃীষ্টীয় রাজ্যও অনেকটা এই রকম। কিন্তু পৃথিবীতে

৮৫