পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪১২ গল্পগুচ্ছ সন্ত্রীর ভারই ষথেষ্ট, তাহার উপরে আবার অন্ধতার প্রকাণ্ড ভার চাপাইতে পারি না। আমার এই বিশ্বজোড়া অন্ধকার, এ আমিই বহন করিব। আমি একাগ্রমনে প্রতিজ্ঞা করিলাম, আমার এই অনন্ত অন্ধতা বারা স্বামীকে আমি আমার সঙ্গে বধিয়া রাখিব না। অলপকালের মধ্যেই কেবল শব্দ-গন্ধ-পশের বারা আমি আমার সমস্ত অভ্যস্ত কম সম্পন্ন করিতে শিখিলাম। এমনকি আমার অনেক গহেকম পবের চেয়ে অনেক বেশি নৈপণ্যের সহিত নিবাহ করিতে পারিলাম। এখন মনে হইতে লাগিল, দটি আমাদের কাজের যতটা সাহায্য করে তাহার চেয়ে ঢের বেশি বিক্ষিত করিয়া দেয়। যতটুকু দেখিলে কাজ ভালো হয় চোখ তাহার চেয়ে ঢের বেশি দেখে। এবং চোখ যখন পাহারার কাজ করে কান তখন অলস হইয়া যায়, যতটা তাহার শোনা উচিত তাহার চেয়ে সে কম শোনে। এখন চঞ্চল চোখের অবতমানে আমার অন্য সমস্ত ইন্দ্রিয় তাহাদের কতব্য শান্ত এবং সম্পন্ণভাবে করিতে লাগিল । এখন আমার স্বামীকে আর আমার কোনো কাজ করিতে দিলাম না, এবং তাঁহার সমস্ত কাজ আবার প্রবের মতো আমিই করিতে লাগিলাম। স্বামী আমাকে কহিলেন, “আমার প্রায়শ্চিত্ত হইতে আমাকে বঞ্চিত করিতেছ।” আমি কহিলাম, “তোমার প্রায়শ্চিত্ত কিসের আমি জানি না, কিন্তু আমার পাপের ভার আমি বাড়াইব কেন।” যাহাই বলন, আমি যখন তাঁহাকে মুক্তি দিলাম তখন তিনি নিশবাস ফেলিয়া বচিলেন। অন্ধ স্ত্রীর সেবাকে চিরজীবনের ব্রত করা পরষের কম নহে। আমার স্বামী ডাক্তারি পাস করিয়া আমাকে সঙ্গে লইয়া মফস্বলে গেলেন। পাড়াগাঁয়ে আসিয়া যেন মাতৃক্লোড়ে আসিলাম মনে হইল। আমার আট বৎসর বয়সের সময় আমি গ্রাম ছাড়িয়া শহরে আসিয়াছিলাম। ইতিমধ্যে দশ বৎসরে জন্মভূমি আমার মনের মধ্যে ছায়ার মতো অস্পষ্ট হইয়া আসিয়াছিল। যতদিন চক্ষ ছিল কলিকাতা শহর আমার চারি দিকে আর-সমস্ত সমতিকে আড়াল করিয়া দাঁড়াইয়াছিল। চোখ যাইতেই বুঝিলাম, কলিকাতা কেবল চোখ ভুলাইফা রাখিবার শহর, ইহাতে মন ভরিয়া রাখে না। দটি হারাইবামাত্র আমার সেই বাল্যকালের পল্লিগ্রাম দিবাবসানে নক্ষত্ৰলোকের মতো আমার মনের মধ্যে উক্তজবল হইয়া উঠিল । অগ্রহায়ণের শেষাশেষি আমরা হাসিমপরে গেলাম। নতন দেশ, চারি দিক দেখিতে কিরকম তাহা বুঝিলাম না, কিন্তু বাল্যকালের সেই গন্ধে এবং অন্যভাবে আমাকে সবাঙ্গে বেষ্টন করিয়া ধরিল। সেই শিশিরে-ভেজা নাতন চষা থেত হইতে প্রভাতের হাওয়া, সেই সোনা-ঢালা অড়র এবং সরিষা খেতের আকাশ-ভরা কোমল সমিষ্ট গন্ধ, সেই রাখালের গান, এমনকি, ভাঙ রাস্তা দিয়া গোরয় গাড়ি চলার সমতি তাহার অনিবাচনীয় ধননি ও গন্ধ লইয়া প্রত্যক্ষ বতমানের মতো আমাকে चिब्रिग्ना वनिल; त्रन्थ छकद उाशव्र ट्काट्ना थठियाम कब्रिटट नाग्निल ना । नई बाणाকালের মধ্যে ফিরিয়া গেলাম, কেবল মাকে পাইলাম না। মনে-মনে দেখিতে পাইলাম, দিদিমা তাঁহার বিরল কেশগুচ্ছ মন্তে করিয়া রৌদ্রে পিঠ দিয়া প্রাঙ্গণে বড়ি দিতেছেন, কিন্তু তাঁহার সেই মদকম্পিত প্রাচীন দাবল কণ্ঠে আমাদের গ্রাম্য সাধ: ভজনদাসের