পাতা:গল্পগুচ্ছ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ ○ミ গল্পগুচ্ছ সতীশ । এ যদি না হয় তবে ঈশ্বরকে আমি আর মানব না। কাগজে নাস্তিকতা প্রচার করব । বিধা। আরে চুপ চুপ, এখন এমন কথা মুখে আনতে নেই। তিনি দয়াময়, তাঁর দয়া হলে কী না ঘটতে পারে। সতীশ, তুই আজ এত ফিটফাট সাজ করে কোথায় চলেছিস। উচু কলার পরে মাথা যে আকাশে গিয়ে ঠেকল ! ঘাড় হে’ট করবি কী করে । সতীশ । এমনি করে কলারের জোরে যতদিন মাথা তুলে চলতে পারি চলব, তার পরে ঘাড় হে’ট করবার দিন যখন আসবে তখন এগুলো ফেলে দিলেই চলবে। বিশেষ কাজ আছে মা, চললেম ; কথাবাত পরে হবে। প্রস্থান বিধ। কাজ কোথায় আছে তা জানি। মা গো, ছেলের আর তর সয় না। এ বিবাহটা ঘটবেই। আমি জানি, আমার সতীশের অদষ্ট খারাপ নয় ; প্রথমে বিঘা যতই ঘটক শেষকালটায় ওর ভালো হয়ই, এ আমি বরাবর দেখে আসছি। না হবেই বা কেন। আমি তো জ্ঞাতসারে কোনো পাপ করি নি— আমি তো সতী সী ছিলাম, সেইজন্যে আমার খবে বিশ্বাস হচ্ছে, দিদির এবারে— স্বাদশ পরিচ্ছেদ সকুমারী। সতীশ ! সতীশ। কী, মাসিমা । সকুমারী। কাল যে তোমাকে খোকার কাপড় কিনে আনবার জন্য এত করে বললেম, অপমান বোধ হল বুঝি ? সতীশ । অপমান কিসের, মাসিমা । কাল ভাদুড়িসাহেবের ওখানে আমার নিমন্ত্রণ झिल उाद्दे– সকুমারী। ভাদুড়িসাহেবের ওখানে তোমার এত ঘন ঘন যাতায়াতের দরকার কী, তা তো ভেবে পাই নে। তারা সাহেবমানষে, তোমার মতো অবস্থার লোকের কি তাদের সঙ্গে বন্ধত্বে করা সাজে। আমি তো শনলেম তোমাকে তারা আজকাল পৌঁছে না, তব বঝি ঐ রঙিন টাইয়ের উপর টাইরিং পরে বিলাতি কাতিক সেজে তাদের ওখানে আনাগোনা করতেই হবে ? তোমার কি একটাও সম্মানবোধ নেই। তাই যদি থাকবে তবে কি কাজকমের কোনো চেষ্টা না করে এখানে এমন করে পড়ে থাকতে। তার উপরে আবার একটা কাজ করতে বললে মনে মনে রাগ করা হয়, পাছে ওঁকে কেউ বাড়ির সরকার মনে করে ভুল করে ; কিন্তু, সরকারও তো ভালো—সে খেটে উপাজন করে খায়। সতীশ। মাসিমা, আমিও হয়তো তা পারতেম, কিন্তু তুমিই তো— সকুমারী। তাই বটে। জানি, শেষকালে আমারই দোষ হবে। এখন বকেছি তোমার বাপ তোমাকে ঠিক চিনতেন। তাই তোমাকে এমন করে শাসনে রেখেছিলেন। আমি আরও ছেলেমানষে বলে দয়া করে তোমাকে স্বরে সস্থান দিলেম, জেল থেকে বাঁচালেম, শেষকালে আমারই দোষ হল। একেই বলে কৃতজ্ঞতা! আচ্ছা, আমারই নাহয়