পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীণাবাই 8 డి ని গিয়েছিলেন। বীণা বিষয়সম্পত্তি সব গুরুজীর ভাই হরিকুমার মিশ্রকে প্রত্যাৰ্পণ করলেন ; শুধু রাজকোষে তাঁর নিজের যে টাকা মজুত ছিল, তাই নিতে রাজী হলেন -গুরুজীর ইচ্ছামত কাশীতে একটি সরস্বতীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করবার অভিপ্ৰায়ে। তিনি আমাকে বললেনতোমাকেও আমাদের সঙ্গে যেতে হবে ; আমি তোমার উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করি ; আর জােনই ত, কারও না। কারও উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করাই হচ্ছে স্ত্রী-ধৰ্ম। আমি অবশ্য তাঁর সহযাত্রী হতে স্বীকৃত হলুম। কেননা তঁর প্রতি আমার ছিল পরাশ্ৰীতি-নামান্তরে ভক্তি। কাশীবাস কাশীতে আমাদের সঙ্গী ছিলেন বসন্তরাও মৃদঙ্গা, হরিকুমারজী (কাকাবাবু), হিম্মত সিং ও ত্ৰিবেণী সিং-সুরপুরের রাজবাড়ীর দুজন বিশ্বস্ত রক্ষী-ও বীণার সেই বুন্দেলখণ্ড দাসীটি। সেখানে গিয়ে দেখা গেল যে, একটি সরস্বতীর মূর্তি গড়তে ও মন্দির তৈরী করতে যে টাকা লাগবে, বীণাবাইয়ের তা নেই। তখন কাকাবাবু প্ৰস্তাব করলেন যে, তিনি ও বীণাবাই দুজনে সঙ্গীত-রসিকদের গানবাজনা শুনিয়ে নাজাই টাকা রোজগার করবেন। হরিকুমারজী ছিলেন একজন অসাধারণ ওস্তাদ। র্তার যন্ত্র রুদ্রবীণা নয়—ক্ষুদ্র সেতার। তিনি করেছিলেন-গানের নয়-গতের সাধনা এবং এ বিষয়ে তাঁর ছিল অসাধারণ কৃতিত্ব। গুরুজী বলতেন-ভাইসাহেব সঙ্গীতের প্রাণের সন্ধান করেননি, কিন্তু তার বহিরঙ্গ সম্পূর্ণ আয়ত্ত করেছেন। তাই র্তার সঙ্গীতে শক্তি আছে, শ্ৰী নেই ; তান আছে, প্ৰাণ নেই। যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধিৰ্ভবতি তাদৃশী। ওস্তাদমহলে তীর পায়ে সকলেই নিজের মাথার পাগড়ি রেখে দিত। ঠিক হ’ল—তারা কারও বাড়ী গাইতে বাজাতে যাবেন না। লোকে তঁাদের যথেষ্ট দক্ষিণ দিয়ে তঁদের বাড়ী এসে বীণার গান ও ভাইসাহেবের সেতার শুনে যাবে। বীণাবাই হস্তায় একদিন, শুধু রবিবারে, দর্শন দেবেন। কিন্তু এ ব্যবসা খুলতে হবে কাশীতে নয়—