পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুতুলের বিবাহ-বিভ্ৰাট 8R(t তুমি ত ব্ৰাহ্মণকন্যা বিয়ে করতে আপত্তি করনি ? -সে তোমার খাতিরে। আমরা যে স্বাধীনতার জন্য প্ৰাণপাত করছি, তার প্রথম experiment করতে হবে পুতুল নিয়ে। পুতুলের রাজ্যে এ প্রথা চলিত হয়ে গেলে, মানুষের মধ্যে পরে তা প্ৰচলিত হবে। কি বলেন ওস্তাদজী ? -পুতুলের মনস্তত্ত্ব সম্বন্ধে আমি অভিজ্ঞ নই। আজীবন পুতুলরাই আমাকে নিয়ে খেলা করেছে, আমি কখনও পুতুল নিয়ে খেলা করিনি; সুতরাং তাদের মতিগতি আমাৰ অবিদিত । গিমীমা বললেন-ঘোষাল ঠিক বলেছ। আমার ছেলেকে নিয়ে একটি পুতুল খেলা করছে। আমার ছেলে এখন হয়েছে পুতুল, সেই পুতুল হয়েছে মানুষ। খোকাবাবু জিজ্ঞেস করলেন-কে সেই পুতুল—যে আমাকে নিয়ে পুতুল নাচাচ্ছে ? --বউমা । আবার কে ? --তোমার তাই বিশ্বাস ? —হঁ। তোমার বিয়ে হয়ে অবধি দেখছি, তুমি আমার অবাধ্য হয়েছ। তুমি যে পুতুলের বিয়েতে মত করেছিলে, সেও বউমার সখ মেটাতে ; আর এখন যে এসে গোলমাল করছ, সেও বৌমার কথা শুনে। পাছে বিয়ে ভেঙ্গে যায়, এই ভয়ে বৌমা তোমাকে চর পাঠিয়েছেন। --তাই যদি তোমার বিশ্বাস হয়, তবে যা খুসি তাই করু, আমি আর কিছু বলব না। --তাইত করব। একবার ছেলের বিয়ে দিয়ে হয়েছি বৌমার দাসী, আবার কাউকে বিয়ে দিতে আমার সখ নেই। নেড় দু’বার বেলতলায় যায় না। এই দেখ বরের আমি ঘাড় মটুকে দিচ্ছি-আর কনেকে ছিড়ে টুকরো করে দিচ্ছিা! তিনি মুখে যা বললেন, কাজে তাই করলেন। খোকাবাবু বললেন-কোন বিষয়ের শেষ রক্ষা করা ত তোমার ধাতে নেই। (8