পাতা:গল্পসংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फांद्र-शेभ्रांद्रौ रुंशी w তঁর কথা বন্ধ ছিল বলে যে তঁর মুখ বন্ধ ছিল, অবশ্য তা নয়। চর্বণ চােষণ লেহন পান প্রভৃতি দন্ত ওষ্ঠ রসনা কণ্ঠ তালুর আসল কাজ সব সজোরেই চলছিল। মাছ মাংস, ফল মিষ্টান্ন, সব জিনিযেই দেখি তঁর সমান রুচি। যে বিষয়ে আলাপ সুরু হল তাতে যোগদান করবার আশা করি, তঁর অধিকার ছিল না। এই অবসরে আমি যুবতীটিকে একবার ভাল করে দেখে নিলুম। তঁর মত বড় চোখ ইউরোপে লাখে একটি স্ত্রীলোকের মুখে দেখা যায় না-সে চোখ। যেমন বড়, তেমনি জলো, যেমন নিশ্চল, তেমনি নিস্তেজ । এ চোখ দেখলে সীতেশ ভালবাসায় পড়ে যেত, আর সেন কবিতা লিখতে বসত। তোমাদের ভাষায় এ নয়ন বিশাল, তরল, করুণ, প্রশান্ত। তোমরা এরকম চোখে মায়া, মমতা, স্নেহ, প্ৰেম প্রভৃতি কত কি মনের ভাব দেখতে পাও—কিন্তু তাতে আমি যা দেখতে পাঈ, সে হচ্চে পোষা জানােয়ারের ভাব ; গরু ছাগল ভেড়া প্রভৃতির সব ঐ জাতের চোখ,- তাতে অন্তরের দীপ্তিও নেই, প্ৰাণের ”ཝརྩ༦ নেই। এর পাশে বসে আমার সমস্ত শরীরের ভিতরে যে অসোয়ন্তি করছিল, তঁর মা’র কথা শুনে আমার মনের ভিতর তার চাইতেও বেশী অসোয়াস্তি করতে লাগল। জান তিনি আমাকে কেন পাকড়াও করেছিলেন ?--সংস্কৃত শাস্ত্র ও বেদান্তদর্শন আলোচনা করবার জন্য ! আমার অপরাধের মধ্যে, আমি যে সংস্কৃত খুব কম জানি, আর বেদান্তের বে দূরে থাক, আলফ পর্যন্ত জানিনে,-- এ কথা একটি ইউরোপীয় স্ত্রীলোকের কাছে স্বীকার করতে কুষ্ঠিত হয়েছিলুম। ফলে তিনি যখন আমাকে জেরা করতে সুরু করলেন, তখন আমি মিথ্যে সাক্ষ্য দিতে আরম্ভ করলুম। “শ্বেতাশ্বতর” উপনিষদ শ্রুতি কিনা, গীতার “ব্ৰহ্মনিৰ্বাণ” ও বৌদ্ধ নির্বাণ এ দুই এক জিনিষ কিনা,~~ এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি নিতান্তই বিপন্ন তয়ে পড়েছিলুম। এ সব বিষয়ে আমাদের পণ্ডিত-সমাজে যে বহু এবং বিষম মতভেদ আছে, আমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বারবার সেই কথাটাই বলছিলুম। আমি যে কি মুস্কিলে পড়েছি, তা আমার প্রশ্নকত্রী বুঝুন। আর নাই বুঝুন, আমি দেখতে পাচ্ছিলুম যে আমার পাশের টেবিলের একটি রমণী তা বিলক্ষণ বুঝছিলেন।