পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬৪
গল্প-দশক।

অলঙ্কাররূপে রূপান্তরিত হইয়াছে। সেই সমস্ত স্বর্ণ মাণিক্য স্বামীর নিকট উপস্থিত করিয়া ইন্দ্রাণী কহিল—আমার এই গহনাগুলি দিয়া আমার পিতামহের দত্ত দান উদ্ধার করিয়া আমি পুনর্ব্বার তাঁহার প্রভুবংশকে দান করিব।

 এই বলিয়া সে সজল চক্ষু মুদ্রিত করিয়া মস্তক নত করিয়া কল্পনা করিল, তাহার সেই বিরলশুভ্রকেশধারী, সরলসুন্দর মুখচ্ছবি, শান্তস্নেহহাস্যময়, ধী-প্রদীপ্ত উজ্জলগৌরকান্তি বৃদ্ধ পিতামহ এই মুহূর্ত্তে এখানে উপস্থিত আছেন, এবং তাহার নত মস্তকে শীতল স্নেহহস্ত রাখিয়া তাহাকে নীরবে আশীর্ব্বাদ করিতেছেন।

 বাঁকাগাড়ি পরগণা পুনশ্চ ক্রয় হইয়া গেলে, তখন প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া গতভূষণা ইন্দ্রাণী আবার নয়নতারার অন্তঃপুরে নিমন্ত্রণে গমন করিল; আর তাহার মনে কোন অপমান-বেদনা রহিল না।