পাতা:গিরিশ-গ্রন্থাবলী (অষ্টম ভাগ).pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᎿᏉ8 গঙ্গ। বালাই, আমি মাথা মুড়োব কেন ? আমার দিব্যি চুলগুলি। রঙ্গলাল। তা বেশ, বাড়ীতে ব’দে বিমুনি ঝোলাও গে। গঙ্গা । তোমায় আমি বুঝতে পারলুম না । রঙ্গলাল। দুনিয়ায় সব কথা কে ৰোঝে বল ? গঙ্গা। পড়াশুনাও কর, বাবুয়ানাও কর, ইয়ারকীও দাও, চিকিৎসাপত্রও ক’রে থাকে, বেথাও করে নি, খবর রেখেছি,-মেয়ে মামুযের কাছেও যাও না ; দান ধ্যানও করে, এদিকে পূজা-অাশ্রয়ের ধারও ধার না। রঙ্গলাল। আমার প্রতি এ শুভদৃষ্টি পড়েছে কেন ? কামদেবও নই, আর তেমন ট্যাকও ভারী নয় । কিছু মতলব আছে কি ? গঙ্গা । রঙ্গলাল । না । গঙ্গা । এই তো, আরও গোল বাধাও । রঙ্গলাল । কেন ? গঙ্গ।। আজ ক' বছরের কথা,—আমি ঠাকুরতলায় সগিৰ্ম্মি হ’য়ে রাস্তায় মূচ্ছিত হ’য়ে পড়ি ; বেগু ব'লে ঘৃণা ক'রে কেউ মুখে একটু জল দিলে না, তুমি তুলে এনে তোমার বাড়ীতে নিয়ে এলে। আপনি নীচে শুয়ে, নিজের বিছানায় জায়গা দিলে। যে যত্ন করলে, ভালবাসার লোকও সে রকম করে না। আমি তখন মনে ক’রেছিলুম যে, তোমার মনের কথা বুঝি কিছু আছে। অনেক ভদ্র লোকের ছেলে আমাদের গোলামের মত সেৰা করে ; পা টেপে, গা টেপে, তারা মনে করে—আমাদের পীরিতের লোক হওয়ার চেয়ে দুনিয়ায় আর পুরুষত্ব নাই । ভেবেছিলেম, বুঝি তুমিও সেই একরকম । তার পর যখন ভাল হ’য়ে আমি বাড়ী যাই, তুমি যেন আমায় চেনই না । রঙ্গলাল। পাচ রকমতো লোক থাকে, বুঝে নাও না,— আমি ঐ এক রকম। গঙ্গা। তুমি কি মেয়েমানুষের সঙ্গে ভাব কর না ? রঙ্গলাল । কেন চাদবদনি! এই যে তোমার সঙ্গে খুব প্রণয় ক’রছি। গঙ্গ। দেখ, আমরা বেশ্য —ভাল কিছু বুঝি না বুঝি, মন্ট আগে বুঝি। ঢং-টাঙে ষে আমাদের বড় কেউ তুমি আমায় চিনেছ ? না, ও চাদবদন তো আমার মনে প’ড় ছে গিরিশ-গ্রন্থাবলী ফাকি দেবেন, সে বড় সোজা নয়, তবে ফাকে যদি আপনি পড়ি তো পড়ি । তুমি কথা ক’চ, ইয়ারকী দিচ্চ, কিন্তু তোমার মুথ-চোকের ভাবে বোধ হয়, বরং ঐ গাছটার পানে দরদ ক'রে চাইচ, তবু আমার পানে চাইচ না। অনেক রাজা-রাজড়ার মজলিস বেড়িয়েছি—আমি হেসে কথা কইলে মন টলে নি, এমন লোক আমি দেখি নি। রঙ্গলাল। দেখ বিবিজান, একটু আধটু যার নেশা হয় তার মন টল-বেটল করতে থাকে,কিন্তু আমি তোমার রূপের নেশায় ভরপূর্ব হ’য়ে গেছি, যতদূর নাকাল হবার ত হয়েছি, এখন তুমি কৃপা ক’রে স’রে পড়। গঙ্গা। না, আমি যাব না, তুমি কি মতলবে এখানে বসে আছ, আমি দেখ বো। রঙ্গলাল। আচ্ছ, আমি যদি স্বীকার পাই, তোমা বাড়ী যাব,—ত হ'লে তুমি সর ? গঙ্গা। না, তা হ’লে তে। সর্বই না । রঙ্গলাল। আচ্ছা থাক,—তুমি আমার একটী কাজ ক’রবে ? গঙ্গা । কি ? রঙ্গলাল। খুব সোজা কাজ, এক ব্যাটাকে পীরিতে ফেলার চেয়েও সোজা কাজ । গঙ্গা। পরিতে ফেলা যদি সোজা হতো, তা হ’লে তোমায় তো পীরিতে ফেলভূম । রঙ্গলাল। দেখ, ঐ অনুগ্রহটি আমায় ক’রো না। আমি একটা বোকারাম, আমায় পীরিতে ফেলে মজা পাবে না। আমার বাবার বাবা ইস্তক পীরিতে পড়েছে। একটা পাট্ট ছোড়া দেখে পীরিতে ফেল যে, আরাম পাবে, গা-পা টিপে দেবে । গঙ্গা। আরাম ছিল—তোমায় পীরিতে ফেলতে পারলে। রঙ্গলাল। তা একটা অ্যারাটে ফ্যারাটে দেখে ক্ষেমাঘেন্না করলেই বা ! গঙ্গা । তোমার খুব চং আছে, আমি বুঝেছি। এখ তোমার কি কাজ বল ? রঙ্গলাল। দেখ, ঐ এক পাগলী আসছে। এ খাবারগুলি রইল ; তুমি ব’লে যে, সে পাঠিয়ে দিয়েছে তুমি থাও ।