প্রতিদিন সযতনে ঢালিয়া দিতাম জল,
প্রতিদিন ফুল তুলে গাঁথিতাম মালিকা।
সোনার লতাটি আহা বন করেছিল আলো—
সে লতা ছিঁড়িতে আছে নিরদয় বালিকা?
কেমন বনের মাঝে আছিল মনের সুখে
গাঁঠে গাঁঠে শিরে শিরে জড়াইয়া পাদপে।
প্রেমের সে আলিঙ্গনে স্নিগ্ধ রেখেছিল তারে
কোমল পল্লবদলে নিবারিয়া আতপে।
এতদিন ফুলে ফুলে ছিল ঢলোঢলো মুখ,
শুকায়ে গিয়াছে আজি সেই মোর লতিকা।
ছিন্ন অবশেষটুকু এখনো জড়ানো বুকে—
এ লতা ছিঁড়িতে আছে নিরদয় বালিকা?
৩১
সেই যদি সেই যদি ভাঙিল এ পোড়া হৃদি,
সেই যদি ছাড়াছাড়ি হল দুজনায়,
একবার এসো কাছে—কী তাহাতে দোষ আছে।
জন্মশোধ দেখে নিয়ে লইব বিদায়।
সেই গান একবার গাও সখী, শুনি—
যেই গান একসনে গাইতাম দুইজনে,
গাইতে গাইতে শেষে পোহাত যামিনী।
চলিনু চলিনু তবে— এ জন্মে কি দেখা হবে।
এ জন্মের সুখ তবে হল অবসান।
তবে, সখী, এসো কাছে। কী তাহাতে দোষ আছে।
আবার গাও, সখী, পুরানো সে গান।
৩২
দুজনে দেখা হল মধুযামিনী রে—
কেন কথা কহিল না, চলিয়া গেল ধীরে।