১৪৭
অনেক কথা যাও যে ব’লে কোনো কথা না বলি।
তােমার ভাষা বােঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি॥
যে আছে মম গভীর প্রাণে ভেদিবে তারে হাসির বাণে,
চকিতে চাহ মুখের পানে তুমি যে কুতুহলী।
তােমারে তাই এড়াতে চাই, ফিরিয়া যাই চলি॥
আমার চোখে যে চাওয়াখানি ধােওয়া সে আঁখিলােরে—
তােমারে আমি দেখিতে পাই, তুমি না পাও মােরে।
তােমার মনে কুয়াশা আছে, আপনি ঢাকা আপন-কাছে—
নিজের অগােচরেই পাছে আমারে যাও ছলি
তােমারে তাই এড়াতে চাই, ফিরিয়া যাই চলি॥
১৪৮
না বলে যায় পাছে সে আঁখি মাের ঘুম না জানে।
কাছে তার রই, তবুও ব্যথা যে রয় পরানে॥
যে পথিক পথের ভুলে এল মাের প্রাণের কূলে
পাছে তার ভুল ভেঙে যায়, চলে যায় কোন্ উজানে॥
এল যেই এল আমার আগল টুটে,
খােলা দ্বার দিয়ে আবার যাবে ছুটে।
খেয়ালের হাওয়া লেগে যে খ্যাপা ওঠে জেগে
সে কি আর সেই অবেলায় মিনতির বাধা মানে॥
১৪৯
তবে শেষ করে দাও শেষ গান, তার পরে যাই চলে।
তুমি ভুলে যেয়ো এ রজনী, আজ রজনী ভোর হলে॥
বাহুডোরে বাঁধি কারে, স্বপ্ন কভু বাঁধা পড়ে?
বক্ষে শুধু বাজে ব্যথা, আঁখি ভাসে জলে॥