বিকচ বকুলফুল দেখে যে হতেছে ভুল,
কোথাকার অলিকুল গুঞ্জরে কোথায়।
এ নহে কি বৃন্দাবন, কোথা সেই চন্দ্রানন,
ওই কি নূপুরধ্বনি, বনপথে শুনা যায়।
একা আছি বনে বসি, পীত ধড়া পড়ে খসি,
সোঙরি সে মুখশশী পরান মজিল সই।
একবার রাধে রাধে ডাক্ বাশি মনোসাধে—
আজি এ মধুর চাঁদে মধুর যামিনী ভায়।
কোথা সে বিধুরা বালা— মলিনমালতীমালা,
হৃদয়ে বিরহজ্বালা, এ নিশি পোহায় হায়।
কবি যে হল আকুল, একি রে বিধির ভুল,
মথুরায় কেন ফুল ফুটেছে আজি লো সই।
৩০৬
পথিক পরান, চল্, চল্ সে পথে তুই
যে পথ দিয়ে গেল রে তোর বিকেলবেলার জুঁই।
সে পথ বেয়ে গেছে যে তোর সন্ধ্যামেঘের সোনা,
প্রাণের ছায়াবীথির তলে গানের আনাগোনা—
রইল না কিছুই।
যে পথে তার পাপড়ি দিয়ে বিছিয়ে গেল ভুঁই,
পথিক পরান, চল্, চল্ সে পথে তুই।
অন্ধকারে সন্ধ্যাযূথীর স্বপনময়ী ছায়া
উঠবে ফুটে তারার মতো কায়াবিহীন মায়া—
ছুঁই তারে না ছুঁই।
৩০৭
তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মন রে আমার।
তাই জনম গেল, শান্তি পেলি না রে মন, মন রে আমার।
যে পথ দিয়ে চলে এলি সে পথ এখন ভুলে গেলি—
কেমন করে ফিরবি তাহার দ্বারে মন, মন রে আমার।