বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রীষ্ম
৪৩৫

তপ্ত ভালের দীপ্তি ঢাকি মন্থর মেঘখানি
এল  গভীর ছায়া ফেলে।
রুদ্রতপের সিদ্ধি এ কি  ওই-যে তোমার বক্ষে দেখি,
ওরই লাগি আসন পাতো হোমহুতাশন জ্বেলে।
নিঠুর, তুমি তাকিয়েছিলে মৃত্যুক্ষুধার মতো
তোমার রক্তনয়ন মেলে।
ভীষণ, তোমার প্রলয়সাধন প্রাণের বাঁধন যত
যেন  হানবে অবহেলে।
হঠাৎ তোমার কণ্ঠে এ যে  আশার ভাষা উঠল বেজে,
দিলে তরুণ শ্যামল রূপে করুণ সুধা ঢেলে।

২১

শুষ্কতাপের দৈত্যপুরে দ্বার ভাঙবে ব’লে,
রাজপুত্র, কোথা হতে হঠাৎ এলে চলে।
সাত সমুদ্র-পারের থেকে  বজ্রস্বরে এলে হেঁকে,
দুন্দুভি যে উঠল বেজে বিষম কলরোলে।
বীরের পদপরশ পেয়ে মূর্ছা হতে জাগে,
বসুন্ধরার তপ্ত প্রাণে বিপুল পুলক লাগে।
মরকতমণির থালা  সাজিয়ে গাঁথে বরণমালা,
উতলা তার হিয়া আজি সজল হাওয়ায় দোলে।

২২

হে তাপস, তব শুষ্ক কঠোর রূপের গভীর রসে
মন আজি মোর উদাস বিভোর কোন্ সে ভাবের বশে।
তব পিঙ্গল জটা  হানিছে দীপ্ত ছটা,
তব দৃষ্টির বহ্নিবৃষ্টি অন্তরে গিয়ে পশে।
বুঝি না, কিছু না জানি
মর্মে আমার মৌন তোমার কী বলে রুদ্রবাণী।