বসন্তগান পাখিরা গায়, বাতাসে তার সুর ঝরে যায়—
মুকুল-ঝরার ব্যাকুল খেলা আমারি সেই রাগিণীরে।
জানি নে ভাই, ভাবি নে তাই কী হবে মোর দশা
যখন আমার সারা হবে সকল ঝরা খসা।
এই কথা মোর শূন্য ভালে বাজবে সে দিন তালে তালে—
‘চরম দেওয়ায় সব দিয়েছি মধুর মধুযামিনীরে’।
২১৬
যদি তারে নাই চিনি গো সে কি আমায় নেবে চিনে
এই নব ফাল্গুনের দিনে— জানি নে, জানি নে।
সে কি আমার কুঁড়ির কানে কবে কথা গানে গানে,
পরান তাহার নেবে কিনে এই নব ফানের দিনে—
জানি নে, জানি নে।
সে কি আপন রঙে ফুল রাঙাবে।
সে কি মর্মে এসে ঘুম ভাঙাবে।
ঘোমটা আমার নতুন পাতার হঠাৎ দোলা পাবে কি তার,
গোপন কথা নেবে জিনে এই নব ফাল্গুনের দিনে—
জানি নে, জানি নে।
২১৭
ধীরে ধীরে ধীরে বও ওগো উতলা হাওয়া,
নিশীথরাতের বাঁশি বাজে— শান্ত হও গো শান্ত হও।
আমি প্রদীপশিখা তোমার লাগি ভয়ে ভয়ে একা জাগি,
মনের কথা কানে কানে মৃদু মৃদু কও।
তোমার দূরের গাথা তোমার বনের বাণী
ঘরের কোণে দেহো আনি।
আমার কিছু কথা আছে ভোরের বেলার তারার কাছে,
সেই কথাটি তোমার কানে চুপিচুপি লও।