৯৫
মাটির বুকের মাঝে বন্দী যে জল মিলিয়ে থাকে
মাটি পায় না, পায় না, মাটি পায় না তাকে।
কবে কাটিয়ে বাঁধন পালিয়ে যখন যায় সে দূরে
আকাশপুরে গো,
তখন কাজল মেঘের সজল ছায়া শূন্যে আঁকে,
সুদূর শূন্যে আঁকে—
মাটি পায় না, পায় না, মাটি পায় না তাকে।
শেষে বজ্র তারে বাজায় ব্যথা বহ্নিজ্বালায়,
ঝঞ্ঝা তারে দিগ বিদিকে কাঁদিয়ে চালায়।
তখন কাছের ধন যে দূরের থেকে কাছে আসে
বুকের পাশে গো,
তখন চোখের জলে নামে সে যে চোখের জলের ডাকে,
আকুল চোখের জলের ডাকে—
মাটি পায় রে, পায় রে, মাটি পায় রে তাকে।
৯৬
আমি সন্ধ্যাদীপের শিখা,
অন্ধকারের ললাট-মাঝে পরানু রাজটিকা।
তার স্বপনে মোর আলোর পরশ জাগিয়ে দিল গোপন হরষ,
অন্তরে তার রইল আমার প্রথম প্রেমের লিখা।
আমার নির্জন উৎসবে
অম্বরতল হয় নি উতল পাখির কলরবে।
যখন তরুণ রবির চরণ লেগে নিখিল ভুবন উঠবে জেগে
তখন আমি মিলিয়ে যাব ক্ষণিক মরীচিকা।
৯৭
মাটির প্রদীপখানি আছে মাটির ঘরের কোলে;
সন্ধ্যাতারা তাকায় তারি আলো দেখবে ব’লে।