পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

করিয়া আমাকে জানাইতে আসিয়াছিল। সে বুঝিত যে এ বিশাল জগতে তাহার আমি, এবং আমার সে ব্যতীত আর কেহই নাই। আর এক জন ছিল, কিন্তু আজ পঞ্চদশ বর্ষ সে কোথায় চলিয়া গিয়াছে সে তাহা বুঝিতে পারে নাই। সে তাহার অভাব বোধ করিত, বেদন অনুভব করিত, কিন্তু প্রকাশ করিতে পারিত না।

 টমিকে কোলে করিয়া গৃহে ফিরিলাম। সে কিছুতেই ফিরিবে না, কেবল পলাইয়া যাইবে। অগত্যা তাহাকে বহিয়া লইয়া আসিলাম। আহার শেষ হইয়াছে, এমন সময় ভৃত্য আসিয়া সংবাদ দিল, টমি পলাইয়াছে। তখনই তাহাকে সন্ধান করিতে বাহির হইলাম। কেদারঘাট হইতে মনিকণিকা পর্য্যন্ত সমস্ত বাড়ী ও গলি খুঁজিয়া বেড়াইলাম, কিন্তু কোথাও তাহার সন্ধান পাইলাম না। বেলা যখন তৃতীয় প্রহর তখন তাহাকে পাইলাম। সে যেন কাহাকে খুঁজিয়া বেড়াইতেছে। আমি তখনও বুঝিতে পারি নাই যে, সে পলাইয়া আসিয়া ভ্রাণশক্তির বলে তাঁহাঁকে খুজিয়া বাহির করিয়াছে। তাহার পর সংবাদ দিবার জন্য আমার সন্ধান করিয়া বেড়াইতেছে। টমি আমাকে দেখিয়া লাফাইয়া উঠিল, আবার আমার কাপড় ধরিয়া টানিতে লাগিল, আমাকে ছাড়িয়া দিয়া আবার খানিক দূর দৌড়িয়া গেল। তখন আমি কতকটা বিস্ময়ে কতকটা কৌতুহলে তাহার অনুসরণ করিলাম।

 গলির ভিতরে একখানি নূতন বাড়ী। তাহার সম্মুখে পাথরের একটি ক্ষুদ্র মন্দির। টমি তাহার ভিতর প্রবেশ করিল। আবার তখনই বাহির হইয়া আমার নিকট আসিল। আমি তাহাকে ধরিতে গেলাম, সে পলাইয়া গেল। আমি স্তম্ভিত হইয়া মন্দিরদ্ধারে দাঁড়াইয়া রহিলাম।

৯৪