বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পথ-হারা।

 মণিলাল। গ্রহের দোষই বল, আর বরাতের দোষই বল, একজনের দোষ বটে।

 তাহার পর মণিলালের মুখ খুলিয়া গেল। সে বলিল, “সুরমা, তোমাকে পাইনি বলে এতদিন বিয়ে করিনি, তোমাকে যদি কখনও পাই তবে বিয়ে করবো, তা নইলে এজন্মে আর নয়।” সুরমা ঘোমটা টানিয়া উঠিয়া পলাইল; আর দুই তিন দিন মণিলালের সম্মুখে বাহির হইল না। বিরক্ত হইয়া মণিলাল চলিয়া যাইতে চাহিলে সুরমা তাহার সহিত দেখা করিয়া বুঝাইয়া সুঝাইয়া তাহাকে নিরস্ত করিল। এইভাবে আরও কিছুদিন কাটিয়া গেল, সুরমা আর বিবাহের কথা পাড়িত না।

 দিন দিন উভয়ের ঘনিষ্টতা বাড়িতে লাগিল, মণিলাল অধিক সময়ই অন্দরে কাটাইত। সুরমার পূজার সময় তাহার নিকটে নীরবে বসিয়া থাকিত, রাত্রিতে তাহাকে রামায়ণ পড়িয়া শুনাইত, দিনের বেলায় দেওয়ানজীর সহিত একত্র বসিয়া কাজ করিত। মণিলালের দিন বড় সুখেই কাটিতে লাগিল। তাহাদিগের ভাবে কোন দোষ না পাইলেও লোকে নিন্দা করিতে আরম্ভ করিল, মণিলাল তাহা শুনিয়াও গ্রাহ্য করিল না। সুরমা তাহা পারিল না,—মরিল।

 একদিন রাত্রিশেষে মণিলাল দেখিল বৃদ্ধ দেওয়ান তাহার বিছানার পাশে দাঁড়াইয়া তাহাকে ডাকিতেছে, সে তাড়াতাড়ি উঠিয়া বসিল, দেওয়ান বলিলেন, “আপনি শীঘ্র আমুন, কর্ত্রীর মৃত্যুকাল উপস্থিত?” এক লম্ফে মণিলাল অন্দরে প্রবেশ করিয়া দেখিল নারায়ণের ঘরের সম্মুখে মাটিতে পড়িয়া সুরমা ছটফট করিতেছে। মণিলাল আসিতেই তাহার হাত ধরিয়া বলিল, “মণিদাদা আমি চলিলাম, আমার একটি কথা রাখিও,

১২৯