পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভবিতব্য



আমি বালিকাকে তাহার দিকে ঠেলিয়া দিলাম, সে বালিকাকে ধরিল, তাহার পর আর যাইতে পারিলাম না, জাহাজ আসিয়া আমার মাথায় লাগিল, আমার বোধ হইতে লাগিল মাথাটা জাহাজ ও জেটির মধ্যে পিষিয়া গেল, কে যেন চারিদিকে অন্ধকার ঢালিয়াদিল। তাহার পর সব অন্ধকার।

 যেদিন আমার সামান্য একটু জ্ঞান হইল, সেদিন মনে হইল, যেন একটা প্রকাণ্ড ঘরের ভিতর কয়খানি খাট রহিয়াছে। তাহার একখানিতে আমি শুইয়া আছি। মাথাটা যেন বড় ভারি, একেবারে তুলিতে পারি না। বিছানা ও বালিসগুলা বড় শক্ত, এক একবার মনে করি কথা বলি, কিন্তু কাহাকে বলিব খুঁজিয়া পাইনা। মাঝে মাঝে একটি বালিকা আসিয়া আমার পাশে দাঁড়াইয়া থাকে, তাহার পর আবার চলিয়া যায় একবার মনে হয় তাহাকে ডাকিব, কিন্তু সে আসিলে ডাকিবার কথা মনে থাকে না। মাঝে মাঝে আবার সব অন্ধকার হইয়া যায়।

 তাহার পর, কতদিন পর জানিনা একদিন জ্ঞানসঞ্চার হইলে দেখিলাম আমি যেন আর একস্থানে আর একটি ঘরে নীত হইয়াছি। বেশ ছোট ঘরটি, ভিতরট নীল রঙ্গের কাগজ দিয়া মোড়, দরজা-জানালা গুলিতে মোটা নীল রঙ্গের পর্দ্দা দিয়া ঢাকা, মাঝখানে একখানি খাট, তাহাতে নীল রঙ্গের নেটের মশারি। ঘরের ভিতরে দুই একটি ছোট টেবিল ব্যতীত আর কিছুই ছিলনা। খাটে শুইয়া আছি, ভাবিতেছি এখানে কি করিয়া আসিলাম, এ কাহার গৃহ। পূর্ব্বে যেখানে ছিলাম সেখানেই বা আমাকে কে লইয়া গিয়াছিল? ঘরের দরজার পরদা একটু ঈষৎ দুলিয়া উঠিল, সদ্যস্নাতা অবগুণ্ঠনরহিত অনিন্দ্য সু ন্দরী একটি কিশোরী ঘরের

১৩৫