বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সোণার বালা।

তুমি রাণীমার বাপের বাড়ী থেকে আসছ? আহা!” আশঙ্কায় মাতার হৃদয় আকুল হইয়া উঠিল, তিনি ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “তোমাদের রাণীমা ভাল আছে ত?”

 দাসী। তাঁরত ভাল মন্দ সবই সমান। আহা, এমন লোকেরও এমন হয়।

 মাতা। কেন গো, কি হয়েছে?

 দাসী। তোমরা কি রাণীমার কোন খোঁজই রাখ না?

 মাতা। তুমি একবার আমাকে তার কাছে নিয়ে চল।

 দাসী অগ্রসর হইয়া চলিল, নিরুপমার মাতা অন্দরমহলে নিরুপমার দেখা পাইলেন না, ঠাকুর বাড়ীতে গিয়া দেখিলেন, নিরুপমা একখানি মোটা তসরের সাড়ী পরিয়া গোপালের ভোগ রাঁধিতেছে, সোনার কর্ণ মলিন হইয়া গিয়াছে, তৈলাভাবে রুক্ষ কেশরাশি বাতাসে উড়িয়া বেড়াইতেছে। কন্যার আকৃতি দেখিয়া মাতার নয়নে জল আসিল। তিনি দূরে দাঁড়াইয়া ডাকিলন “নিরু!” বহুদিন পরে পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনিয়া নিরুপমা চমকাইয়া উঠিল, হাঁড়ী নামাইয়া বাহির হইয়া আসিল, একবার “মা” বলিয়া ডাকিয়া মাতার কণ্ঠলগ্ন হইল। দশবৎসর পরে মাতা-পুত্রীর মিলন হইল, অশ্রুজলে উভয়ের গণ্ডস্থল ভাসিয়া গেল, মাত কাঁদিলেন কন্যার অবস্থা দেখিয়া, কন্যা কাঁদিল মাতাকে দেখিয়া আনন্দে। মা কেন কাঁদিতেছেন নিরুপমা তাহা বুঝিতে পারিলন, সে ভাবিল যে তাহার মাতাও আনন্দে কাঁদিতেছেন। মাতা ভাবিয়াছিলেন কন্যা রাজরাজেশ্বরী হইয়াছে, তাহার ঐশ্বর্য্য দেখিয়া নয়ন সার্থক করিবেন। কিন্তু নিরাভরণা বেদনাক্লিষ্ট কন্যাকে দেখিয়া তাঁহার উল্লাস দুঃখে পরিণত হইল। অনেকক্ষণ কাঁদিয়া উভয়ে শান্তি লাভ করিলেন। দেবসেবা

১৪৭