পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বশীকরণ।

 শোভা এই বলিয়া বাহিরে উঠিয়া আসিল, দেখিল বিভা বরান্দায় দাঁড়াইয়া আছে। তাহাকে দেখিয়া শোভা হাসিয়া লুটাইয়া পড়িয়া, তাহার পর বিভাকে জিজ্ঞাসা করিল “খুড়িমা কি বল্লেন শুনেছিস?” বিভা বলিল হাঁ, তাহার পরে প্রাণের ব্যাকুলতায় বলিয়া ফেলিল “দিদি, তোমার পায়ে পড়ি, তুমি যেন অসুধ টসুধ খাওয়াইওনা। মাদুলী পরিয়ে কাজ নেই, আমার অদৃষ্ট্রে যা আছে তা হবেই।” শোভা হাসিয়া বলিয়া উঠিল “ইস, এত? কবে থেকে লো?” বিভা চোখ রাঙ্গাইয়া বলিল “যাও—তোমার সকলি ঠাট্টা।”

 শোভা বিভাকে ছাড়িয়া নিশীথ বাবুকে লইয়া পড়িল, খুল্লতাত-পত্নীর। কথা বলিয়া হাসিয়া স্বামীর অঙ্গে লুটাইয়া পড়িল। তাহার বিলম্ব দেখিয়া, বিভার মাতা কি বুঝিয়া, আর কোন দিন সে কথা উত্থাপন করেন নাই। শোভা তাহার পর হইতে একটা রহশ্বয়ের ছুতা পাইয়া গেল, সে কথায় কথায় নিশীথ বাবুকে বলিত “তোমাকে কটা মাদুলী পরিয়ে বশ করেছি বলত?

 পুলিনের মনে হইত যে সে ঘরে এক নহে, কে যেন আসিয়া দূরে দাঁড়াইয়া আছে, সে তাহাকে আহবান করিবে সেই জন্য অপেক্ষা করিতেছে। ঘরের বাহিরে গিয়া দেখিত কেহই নাই, সে বড় আশ্চর্য্য হইয়া যাইত। সে একদিন কলেজ হইতে ফিরিয়া ঘরে ঢুকিয়া দেখিল যে তাহার চেয়ারে বসিয়া কে একজন ঘুমাইয়া আছে। নিকটে গিয়া দেখিল প্রভা (অর্থাৎ বিভা)। দেখিয়াই সে দুই পা পিছাইয়া আসিল, তাহার পিছনে একখানা চেয়ার ছিল, পুলিন তাহাতে বাধিয়া পড়িয়াগেল। পতনের শব্দে বিভার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। সে ব্যস্ত হইয়া উঠিয় দাঁড়াইল,

১৬৭