পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

 যুবতী। আপনাকে কতদিন বারণ করেছি যে একাদশীর দিন ইন্দুকে নিয়ে বেরুবেন না।

 প্রৌঢ়া। আমি কিছু বুঝতে পাচ্ছিন, বাছা! ইন্দুর কি সকল জ্বালাযন্ত্রণা জুড়াল?

 এই কথা বলিয়া প্রৌঢ় কন্যার পার্শ্বে বসিয়া পড়িলেন। যুবতী তাঁহাকে আশ্বাস দিয়া ঝরণা হইতে কাপড় ভিজাইয়া জল আনিয়া ইন্দুর চোখে মুখে দিতে লাগিলেন। একদণ্ড পরে তাহার জ্ঞান হইল, মাত। ও ভ্রাতৃবধূ বহু কষ্টে তাহাকে লইয়া গৃহে ফিরিলেন।

 বৃদ্ধাবস্থায় গৌরসুন্দর মিত্র কঠিন রোগে আক্রান্ত হইয়া মরিতে বসিয়াছিলেন। বহু কষ্টে রোগ মুক্ত করিয়া চিকিসংকগণ তাঁহাকে বায়ুপরিবর্তনের জন্য বিদেশে যাইতে অনুরোধ করিয়াছিলেন। সেই জন্য গৌরসুন্দর বাবু সমস্ত পরিবার লইয়া চুনারে আসিয়াছেন। প্রতিদিন দ্বিপ্রহরে মহিলাগণ পর্ব্বতমালার চরণপ্রান্তে অরণ্য মধ্যে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইতেন! যে দিনের কথা পূর্ব্বে বলা হইল, সেদিন তাঁহারা পর্ব্বতের উপত্যকায় বেড়াইতে আসিয়াছিলেন। গৌরসুন্দরবাবু তখন ধীরে ধীরে বল ফিরিয়া পাইতেছেন।

(৩)

 কক্ষের প্রাচীরে একখানি বহু পুরাতন ফটোগ্রাফ ঝুলান থাকিত। তাহাতে যে চিত্র ছিল তাহা বহু পূর্ব্বে মিলাইয়া গিয়াছে, পরে কোন ব্যক্তি মসী দিয়া তাহার সংস্কার করিবার চেষ্টা করিয়াছে। তাহাতে এখন মুখের ছায়া, চক্ষু দুইটি এবং ভ্রুযুগ্ম ব্যতীত আর কিছুই নাই। প্রতিদিন প্রভাতে শয্যা ত্যাগ করিয়া ইন্দু চিত্রখানি খুলিয়া লয়। তাহা

৫৬