পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ8 Գ গৃহশ্ৰী ক্ষুদ্র বিষয়ে যাহাতে স্বামী স্ত্রীর কৰ্ত্তব্যের উপর দাবী রাখেন, যথা,-তাহার কাপড়-চোপড় গুছাইয়া রাখা, কি যাহা যখন দরকার, ঠিক করিয়া রাখাইত্যাদি বিষযে স্ত্রী অমনোযোগী, অথচ অন্যান্য ব্যাপার লইযা তাহার মনোযোগের অভাব নাই। স্বামী যখন এই ভাবে পদে পদে স্ত্রীর তাচ্ছিল্য দেখেন, তখন তিনি মেঙ্গের প্রতিদান পান নাই,- এই ধারণা তাহার মনে বদ্ধমূল হয় ; এইরূপ ভিত্তির উপর পবিশেষে সন্দেহ-তরুর উদ্ভব হইতে পাবে। স্বামীর সন্দেহ নিবারণের একমাত্র উপায়, স্ত্রী স্বামীর প্রতি বেশী মনোযোগ ও স্নেহ দেখাইবেন । সন্দিগ্ধ-চিত্ত পেচকের মত বসিয়া বসিয়া কেবল কুধ্যান করে,—কারণ, পেচক যোগ্য নহে যে, ঈশ্বরকে ধ্যান করিবে, -সে তথাপি ধ্যান করে, তাহা কু বৈ কি ? সন্দিগ্ধ-চিত্তের এই ধ্যানের ফলে কত অসম্ভব কথা সম্ভবের মত হইয়া প্ৰতীয়মান হয। অনেক সময় স্ত্ৰা যতই সাবধান হইবেন, ততই সন্দেহ বাড়িয়া চলিবে । স্ত্রীর ঘোমটা বেশী হইলে সে মনে করিবে, ইহা লজ্জার অভিনয় মাত্র, লোক দেখাইবার ভাণ । যদি ঘোমটা কম থাকে, তবে তাহা প্ৰকাশ্য লজ্জাহীনতা, তাহারও কত অর্থ হইবে । স্ত্রী যদি ঘরে বসিয়া থাকেন,-"তবে সে মনে করবে, একাকী অপর হইতে দূরে থাকিয়া সে কি গুপ্ত-অভিসন্ধি করিতেছে ; যদি সকলের মধ্যে চলাফেরা করেন, তবে স্বামীর চক্ষু ডিটেকটিভের ন্যায় স্ত্রীর ছায়ার পাছে পাছে ফিরিবে । স্ত্রী সাবধান হইয়া কি করিবেন ? রোগ যখন স্বামীর মনে, তখন তিনি বাহিরে চিকিৎসা করিয়া কি লাভ পাইবেন ? যাহার রোগ। তাহারই চিকিৎসার দরকার । এই সন্দেহের ফলে কত স্বামী পাগল হইয়া গিয়াছেন। পূর্ববঙ্গের একটি উকীল এক দিন স্ত্রীকে প্রহার করিয়া আধমরা করিয়া ফেলিয়াছিলেন, সকলে যাইয়া কারণ জিজ্ঞাসা করাতে, তিনি বলিলেন, “আমি দেখিলাম, ঐ বাড়ীর জানালা হইতে একটা লোক পক্ষিীরূপ ধারণ করিয়া আমার স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করিল।