ভবানীদাসের পুঁথি—
ঝুলিতে ঢালিয়া হস্ত হৈয়া গেল ধান্দা।
ঝুলি-এ খাইল কৌড়ি মোরে দেও বান্ধা॥
হেন বন্ধক না লইব সুরিপু নগর॥ (পৃঃ ৩৮৬)
বর্ণনীয় বিষয়ে অনেক স্থলে অনৈক্য থাকিলেও সুকুর মামুদের পুঁথির সহিত রংপুরের গাথার ভাষা ও ভাবগত সাদৃশ্য আরও স্থানে স্থানে লক্ষিত হয়।
রংপুরের গাথার ভাষা ও বর্ণবিন্যাস কোন হস্ত লিখিত পুঁথি না পাওয়ায় রংপুরে সংগৃহীত গাথায় বর্ণবিন্যাস যথাসম্ভব উচ্চারণানুযায়ী করার চেষ্টা করা হইয়াছে; কিন্তু সর্ব্বত্রই যে কৃতকার্য্য হইয়াছি একথা বলা যায় না। রংপুরের প্রাচীন ভাষা ক্রমশঃ পরিবর্ত্তিত হইয়া সাধারণ বাঙ্গালা ভাষার সহিত একীভূত হইয়া যাইতেছে। ক্রিয়ার রূপও ক্রমশঃ বদলাইয়া যাইতেছে। এই গাথাতেই স্থানে স্থানে প্রাচীন রূপ, স্থানে স্থানে নতুন রূপ লক্ষিত হইবে। পূর্ব্বে রংপুরে যেরূপ ক্রিয়ার রূপ প্রচলিত দেখা যাইত তাহা নিম্নে প্রদর্শিত হইল:
ধর (ধ) ধাতু
প্রথম পুরুষ (সংস্কৃত উত্তম পুরুষ) (আমি ধরি =) মুঞি ধরোঁ |
দ্বিতীয় পুরুষ (সং মধ্যম পুরুষ) (তুমি ধর =) তুই ধর বা তোমরা ধর |
তৃতীয় পুরুষ (সং প্রথম পুরুষ) (সে ধরে =) তাঁয় ধরে, উঁয়ায় ধরে |