লেখমালা।
(১৯)
তিনি জ্ঞানে বৃহস্পতি, তেজে দিনপতি [সূর্য্যদেব], পুরুষকারে শ্রীপতি, ধৈর্য্যে অম্বুপতি, ধনে ধনপতি [কুবের] এবং দানকার্য্যে চম্পাপতি [কর্ণ]। ভাষায় এই সকল উপমা প্রসিদ্ধ বলিয়াই, তাঁহাকে এরূপ বলা হইল। কিন্তু আমরা তাঁহাকে সর্ব্বগুণোপেত “তৎসদৃশ” বলিয়াই বর্ণনা করিব।[১]
(২০)
তাঁহার শ্রীবুধদেব নামক এক অনুজ[২] বর্ত্তমান। তিনি শ্রীরামভদ্রের অনুজ লক্ষ্মণের ন্যায় সেই সকল [প্রসিদ্ধ] নির্ম্মল গুণে ধর্ম্মর্দ্ধির এবং শীলর্দ্ধির আবাসভূমি বলিয়া পরিচিত। সৎফল-পল্লবপ্রসূ-দানকার্য্যে দ্বিজকুলকে প্রীতিদান করিয়া, বাহুবল-বিখ্যাত সেই কনিষ্ঠ ভ্রাতা কল্পতরুর প্রতিমূর্ত্তি বলিয়া সুবিখ্যাত [হইয়াছেন]।
(২১)
[পুরাকালে] মুনীন্দ্রাগ্রগণ্য স্বগোত্র-সংস্থাপক কৌশিক নামক মুনি বর্ত্তমান ছিলেন। পদ্মজন্মা ব্রহ্মার মুখচতুষ্টয়ে ভ্রমণ করিতে করিতে পরিশ্রান্ত হইয়া, সরস্বতীদেবী তাঁহার [কৌশিকের] মুখপদ্মে আসিয়া, সুখে অবস্থিতি করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন।
(২২)
তদীয় মহদ্বংশে, বরেন্দ্রীর অন্তর্গত, সুশাসন-সম্পন্ন[৩] ভাবগ্রামে, ভরত নামক ব্রাহ্মণ প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন। তাঁহার গুণগ্রামের উল্লেখ করা দূরে থাকুক, তাঁহার নাম মাত্রের উল্লেখ করিলেই, সমস্ত পাপ-প্রপঞ্চ বিনষ্ট হইয়া যায়।
(২৩)
তাঁহার যুধিষ্ঠির নামক বিপ্র[কুল]তিলক পণ্ডিতাগ্রগণ্য পুত্র জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি শাস্ত্রজ্ঞান-পরিশুদ্ধ-বুদ্ধি এবং শ্রোত্রিয়ত্বের সমুজ্বল যশোনিধি ছিলেন।
- ↑ এই শ্লোকের শেষ ভাগে কবি “অনন্যয়ালঙ্কারের” অবতারণা করিবার চেষ্টায় লিখিয়াছেন—“তাঁহার উপমা কেবল তিনি”। এরূপ রচনার সর্ব্বজন-বিদিত উদাহরণ—
“राम-रावणयो र्युद्धं राम-रावणयो रिव।”
- ↑ “অনুজভূঃ”-শব্দটি উল্লেখযোগ্য। অধ্যাপক ভিনিস্ লিখিয়াছেন—“Anujabhuh is ambiguous. I explain thus:—anujabhuh (utpattih) yasya so nujabhuh.”
- ↑ অধ্যাপক ভিনিস্ লিখিয়াছেন—“Sasanogre I take equal to Ugrasasane, the commoner bahubrihi.”
মহাসাগরের সঙ্গে বৈদ্যদেবের সাদৃশ্যের অভাব দেখাইয়া, কবি বলিয়া গিয়াছেন,—যদি সেই দুইটি বিষয়েও সাদৃশ্য থাকিত, তাহা হইলে বৈদ্যদেবকে “অম্বুধি-সদৃশই” বলা যাইতে পারিত। ইহাতে বৈদ্যদেবের প্রাধান্যই ধ্বনিত হইয়াছে। এক সময়ে এই শ্রেণীর রচনা কবি-প্রতিভার উৎকৃষ্ট নিদর্শন বলিয়াই পরিচিত ছিল।
১৪৪