(১৮)
বিপক্ষপক্ষের প্রমদাসমূহের [বৈধব্য-সাধনে] সিন্দূর-চিহ্ন বিলোপক্রীড়ায় আরক্ত-পাণিতল এই রাজা পৃথিবী-সম্ভোগকারী গোপালকে জন্মদান করিয়াছিলেন। তিনি ধাত্রী-ক্রোড়ে পালিত হইবার সময়ে, জৃম্ভমান-মহিম হইয়া, স্বকীয় কীর্ত্তিময় শুভ্র-ধূলিপটল-বিক্ষেপে শৈশবে ক্রীড়া-বিস্তার করিয়াছিলেন।[১]
(১৯)
তাঁহার পর, তদীয় [অচরম-তাত] কনিষ্ঠতাত[২] রামপালাত্মজন্মা মদনদেবী-গর্ভসম্ভূত মদনপাল ভুবন-গর্ভকে চন্দ্রগৌর কীর্ত্তিকলাপে পরিপূর্ণ করিয়া, সপ্তসমুদ্র-মাল্যধরা বসুন্ধরা পালন করিয়াছিলেন।
১৫৮
- ↑ গোপালদেবের নাম রাজসাহীর অন্তর্গত মান্দায় প্রাপ্ত একখানি মাত্র প্রস্তর-লিপিতে দেখিতে পাওয়া গিয়াছে। এই শ্লোকের বর্ণনায় গোপালদেব শৈশবেই পরলোকগত হইবার আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায়। রাজকবি তাঁহার বীরকীর্ত্তির উল্লেখ করেন নাই,—কেবল “উর্ব্বীভুজং” বলিয়াছেন।
- ↑ এই শ্লোকের ‘অচরম-তাত’ একটি দুর্লভ প্রয়োগ। অমরকোষের [৩।১।৮১] ‘চরম’-শব্দের ব্যাখ্যায় দেখিতে পাওয়া যায়,—
“अन्तो जघन्यं चरम-मन्त्य-पाश्चात्य-पश्चिमम्।”
ইহা হইতে [যাহার চরম নাই এই অর্থে] অচরমতাত-শব্দের কনিষ্ঠতাত-অর্থ অনুমিত হইতে পারে।
‘কামরূপে’ বিদ্রোহ-বিকার নিরাকৃত হইবার কথা [কমৌলি-লিপিতে] উল্লিখিত আছে। সুতরাং এই শ্লোকে রাজকবি তৎকালপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ করিয়াই, কুমারপালের কীর্ত্তিকলাপের বর্ণনা করিয়াছেন।
অমরকামিনীগণের কপোলবিন্যস্ত কর্পূর-পত্রলেখা উল্লিখিত হইয়াছে কেন, তাহা বোধগম্য হয় না। বীরকীর্ত্তির পুরস্কাররূপে, দেহাবসানের পর, কুমারপাল এইরূপ কীর্ত্তিলাভ করিয়া থাকিবেন।