পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মঙ্গল
১১৫

ফেলিল। লোকে ভাবিল, বুঝি বা প্রলয়কাল উপস্থিত হইয়াছে। শিব এই বীরপুরুষের নাম দিলেন বীরভদ্র।

 বীরভদ্র কিন্তু দক্ষ-যজ্ঞ নষ্ট করিয়াই ক্ষান্ত হইল না,—এক লাফে স্বর্গে উঠিয়া স্বর্গ নষ্ট করিল, আর এক লাফে পাতালে নামিয়া পাতালপুরী ধ্বংস করিল; সপ্ত সমুদ্রে পর্য্যন্ত আগুন ধরাইয়া দিল, সমুদ্রের জল দাউ দাউ করিয়া জ্বলিতে লাগিল। স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালের লোকেরা বীরভদ্রের অত্যাচারে ‘ত্রাহি ত্রাহি’ ডাক ছাড়িতে লাগিল!

 শিব এই-সব দেখিয়া মহা চিন্তায় পড়িলেন। বীরভদ্রের মত পালোয়ানকে ত্রিভুবনের মধ্যে রাখিলে যে, সৃষ্টি লোপ পাইয়া যাইবে, তাহা তিনি স্পষ্ট বুঝিলেন। বীরভদ্রের ডাক পড়িল। শিব তাহার গায়ে হাত বুলাইয়া বলিলেন, তাহার অদ্ভুত শক্তির পরিচয় পাইয়া তিনি খুবই খুসী হইয়াছেন। কিন্তু এখন আর তাহার ত্রিভুবনে থাকা চলিবে না; আকাশের উপরে গ্রহের আকারে বাস করিতে হইবে। শিবের আদেশ অমান্য করা কাহারো সাধ্য নাই। আদেশ হইবামাত্র, বীরভদ্র একটি গ্রহের আকার লইয়া আকাশের উপরে ভাসিয়া বেড়াইতে লাগিল। পুরাণের মতে এই গ্রহটিই আমাদের মঙ্গল গ্রহ।

 তোমরা কখনো মঙ্গলকে দেখিয়াছ কি? যদি না দেখিয়া থাক, সুবিধামত একবার দেখিয়া লইয়ো। সাধারণতঃ ইহাকে লাল রঙের নক্ষত্রের মত দেখায়,—বোধ হয় এই জন্য আমাদের দেশের প্রাচীন জ্যোতিষীরা ইহার “অঙ্গারক” এবং “লোহিতাঙ্গ” নাম দিয়াছিলেন। কিন্তু মঙ্গলকে কখনই শুক্রের মত উজ্জ্বল দেখা যায় না। এই জন্য ইহাকে যখন-তথন চিনিয়া লইতে মুস্কিল হয়। লাল রঙের অনেক নক্ষত্র আকাশে আছে, এই সব নক্ষত্রের মধ্যে মঙ্গলকে হারাইয়া ফেলা আশ্চর্য্য নয়। কিন্তু সে যখন পৃথিবীর নিকটে আসে তখন তাহাকে বেশ চেনা যায়। দূরের জিনিস কাছে আসিলেই বড় দেখায়। এজন্য মঙ্গলকেও ঐ সময়ে বেশ