পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২০
গ্রহ-নক্ষত্র

ভাঙিয়া যায় না। কেবল যেটুকুতে ধাক্কা লাগে তাহাই জ্বলে ও পোড়ে। কাজেই এ রকম ঠোকাঠুকির আগুন বেশি দিন থাকে না, অল্প দিনের মধ্যে ঠাণ্ডা হইয়া নিভিয়া যায়। কিন্তু যখন একটা নক্ষত্র একবারে আর একটার গায়ে পড়িয়া ধাক্কা দেয়, তখন কাহারো রক্ষা থাকে না। নিমেষের মধ্যে দু’টাই সম্পূর্ণ ভাঙিয়া-চুরিয়া জ্বলিয়া উঠে। এই আগুন কয়েক দিনের মধ্যে কমিয়া যায় বটে, কিন্তু একবারে নিভে না। রাবণের চিতার মত তাহা দাউ দাউ করিয়া লক্ষ লক্ষ বৎসর ধরিয়া জ্বলিতে থাকে।

 জ্যোতিষীরা স্বচক্ষে এপর্য্যন্ত যে-সকল নূতন নক্ষত্রের জন্ম দেখিয়াছেন, তাহাদের মধ্যে কেবল দুইটারই দেহ জ্বলিতে দেখা যাইতেছে। এ কথা তোমাদিগকে আগেই বলিয়াছি। কিন্তু তাই বলিয়া মনে করিয়ো না, এই মহাকাশে নক্ষত্রদের কেবল দু’টা চিতাই আছে। এই রকম আগুন আকাশের যেখানে-সেখানে দেখা যায়। যখন পৃথিবী ও চন্দ্রসূর্য্যের জন্ম হয় নাই, এরকম প্রাচীন কালেও নক্ষত্রদের ঠোকাঠুকি হইয়াছে এবং তখন যে-সব আগুন জ্বলিয়াছে তাহা নিভিয়া যায় নাই। আকাশের প্রায় পাঁচ হাজার জায়গায় এই রকম আগুনের সন্ধান পাওয়া গিয়াছে। জ্যোতিষীরা এগুলিকে নীহারিকা (Nebula) বলেন। নামটি যতই মিষ্টি হউক না কেন, এগুলি যে সত্যই বড় বড় মরা নক্ষত্রদের চিতার আগুন, তাহা প্রায় সকলেই স্বীকার করেন।