পাতা:গ্রহ-নক্ষত্র.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের আগ্নেয় পর্ব্বত
৬৯

হইলে পৃথিবীর লাফের ছয় গুণ লাফাইতে পারিবে, অর্থাং ছত্রিশ হাত, কি বেয়াল্লিশ হাত অনায়াসেই লাফাইবে। ইহা বাঘের লাফের চেয়েও অনেক বেশি। ঢিল ছুঁড়িয়া তুমি ঢিলটাকে কত উপরে উঠাইতে পার আন্দাজ করিয়া দেখিয়াছ কি? তোমার হাতে যদি খুব জোর থাকে, তাহা হইলে ত্রিশ হাতের বেশি বোধ হয় তুমি ঢিলকে উপরে উঠাইতে পারিবে না; কিন্তু চাঁদে গিয়া ঠিক সেই-রকম জোরে ঢিল ছুঁড়িলে সেটি প্রায় একশত আশী হাত পর্য্যন্ত উপরে উঠিবে।

 তোমার ওজন কত আমি ঠিক জানি না; হয় ত তুমিও জান না। মনে করা যাক্, তোমার ওজন ত্রিশ সের। তুমি যদি চাঁদে গিয়া উপস্থিত হও, তাহা হইলে সেখানে পা-দিবামাত্র, তোমার শরীরটা খুব হাল্‌কা বোধ হইবে। কারণ চাঁদ পৃথিবীর চেয়ে খুব অল্প জোরে তোমার শরীরকে টানিবে। সেখানে যদি ওজনের কল থাকে, তাহা হইলে দেখিবে তোমার শরীরের ত্রিশ সের ওজন কমিয়া পাঁচ সের হইয়া দাঁড়াইয়াছে। চাঁদের রাজ্যটা বড়ই অদ্ভুত নয় কি?

 চাঁদে পঞ্চাশ এবং কখনো কখনো একশত মাইল চওড়া আগ্নেয় গিরি কি রকমে উৎপন্ন হইয়াছিল, তাহা বুবাইতে গিয়া চাঁদের এই রকম অল্প টানের কথাটাকেই জ্যোতিষীরা বলিয়াছেন। তোমরা বোধ হয় জলের ফোয়ারা দেখিয়াছ, আমাদের দেশের বড় বড় সহরের বাগানে এই-রকম ফোয়ারা অনেক দেখা যায়। মাটিতে-পোঁতা নলের মুখ দিয়া শত শত ধারায় জল পিচ্‌কারীর মত জোরে উপরে উঠে, তাহার পরে সেগুলি নীচে নামিয়া ছত্রাকারে ফোয়ারার চারিধারে পড়িতে থাকে। ফোয়ারার জোর যত বেশি হয়, জলের ধারাও তেমনি বেশি উপরে ওঠে ও নামিবার সময়ে নল হইতে অধিক দূরে ছড়াইয়া পড়ে।