পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় প্রস্তাব । ১২১ আসক্তি ও অধীনতাই ধৰ্ম্মবীজ এবং উহা হইতেই ধৰ্ম্মোংপত্তি। এই বীজ কি কীট পতঙ্গ, কি পশু, কি মানব, সকলেতেই প্রকৃতি কর্তৃক যথাযোগ্য পরিমাণে নিহিত করা রহিয়াছে । জীবোন্নতিসহ ক্রমপরিণতি সহকরে উহাই মানবে আসিয়া ধৰ্ম্মভাবে ফুরিত হয়। ফলতঃ উচ্চশক্তি ঈশ্বর বা দেবতায় যে বিশ্বাস ও ভক্তি, তাহ। মানবের স্বভাবজাত ; নিজকৃত নহে । বৈজ্ঞানিকচূড়ামণি যে ডারইন বানরাদি নকৃষ্ট জীব হইতে মনুষ্যের উৎপত্তির কথা উত্থাপন ও সমর্থন করিয়াছিল, সেও সে উচ্চের অনুভূতি হইতে আত্মরক্ষা করতে পারে নাই ; পারলৌকিক বিশ্বাসের প্রতি যাহার এতটা বিরোধিতা, সেও তাহ অনুভব করিয়াছিল। ডারুইন কর্তৃক একস্থানে এরূপ উক্ত হটমাছে—‘এই বিশ্বব্রহ্মাও ও ইহার সর্ব্বথা আশ্চৰ্য্য ক্রিয়াকলাপাদি পৰ্য্যবেক্ষণ করলে, মনোমধ্যে যেন স্বতঃই হই অনুভূত হয় যে, অবশ্যই এ সকলের মূলে আদিকারণ স্বরূপ একটি বিধাতৃ-শক্তি বর্তমান রহিয়াছেন ; এবং মনের এই যে অনুভূতি ইহা সৰ্ব্বতোভাবেই অনিবাৰ্য্য। কিন্তু তদ্রুপ অনুভব করার পরক্ষণেই আবার এইরূপ বিতর্ক উপস্থিত হয় যে, মানুষের যে মন সেই সামান্ত আদি জৈবিকপদার্থ হইতে আরম্ভ করিয়া তাবৎ ইতর প্রাণিপরম্পরায় বিবর্তনিয়মে বৰ্দ্ধিত হইয় তাহার বর্তমান পুষ্টি প্রাপ্ত হইয়াছে এবং যে বিবৰ্ত্তনিয়মানুক্রমকে আমি সৰ্ব্বতোভাবে বিশ্বাস করিয়া থাকি, সেই মনের তন্দ্রপ অনুভূতির উপর সত্যস্বরূপ জানে নির্ভর করা যাইতে পারে কি না ?’ বলাবাহুল্য যে, ডারুইনের অনুভূতিটুকু স্বভাব হইতে এবং বিতৰ্কটুকু স্বভাববিপৰ্য্যয়কারী বিকৃত শিক্ষণ হইতে সমুৎপন্ন হইয়াছে। ডারুইনের বিশ্বাস যে, বিবৰ্ত্তনিয়মানুসারে, যাহার যেমন প্রয়োজন, সেই প্রয়োজন অনুসারেই তাহার মন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ইত্যাদি