পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম প্রস্তাব । ఆy জলধারা, ক্ষিপ্ত-বিক্ষিপ্ত নানা ধারায় শেষে একধারা হইয়া যেমন তর তর করিয়! চলিয়াছে ; অববাহিকাসমন্বিত মহাস্রোতস্বতীরও সেই একই প্রকারে পরিণতি ও গতি । নিত্য উদয়াস্ত ও আবর্তন কালে যে দিবা, বৎসরের তাহাই ক্ষুদ্ররূপ। প্রাত্যহিক নিদ্র জাগরণ, নৈমিত্তিক মৃত্যু ও পুনর্জন্মের অবিকল ক্ষুদ্র অভিনয় । কোন এক গৃহস্থ, সমস্ত সমাজের স্বক্ষ প্রতিকৃতি । অথবা এত কথাই বা বলি কেন, প্রতি পদার্থ ব্ৰহ্মাণ্ডপ্রতিরূপ এবং প্রতি পদার্থে, অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডের স্থষ্টি স্থিতি ও বিলয়তত্ত্ব নিহিত রহিয়াছে। প্রতি ধূলিকণায়, পৃথিবীর অনন্ত আকৃতির সম্ভবত ; প্রতি বালুকাবৎ বীজ, অনন্ত অরণ্যানীর জনক ; এবং প্রতি কুমারী কামিনী, অনন্ত জীব ও জাতির জননী । সুতরাং যে কোন পদার্থের সম্যক্ পরিচয় লাভ করিতে পারিলে, তাহারই সাহায্যে ব্রহ্মাণ্ডতত্ত্বে প্রবেশ করিতে পারা যায়। তবে কি না, আমরা এখনও অতি স্থলদৃষ্টি ও সামান্তশক্তি ; তাই কেবল সদৃশ তত্ত্বের সাহায্য পাইলেই সদৃশ অনুভবে সমর্থ হই । অতঃপর ইহা বলা বাহুল্য যে, সেই সদৃশতত্ত্ব অনুসারে এবং শীঘ্র নিয়মের অনুসরণে, যে কেহ আত্মজীবনের প্রতি অনুধ্যান আত্মজীবনকে অনুশীলন, ও আত্মজীবনতত্ত্বে প্রবেশলাভ করিতে পারিয়াছে তাহার পক্ষে যে কোন মানবজীবন বা মানবের জাতীয় জীবন সম্বন্ধীয় ঘুে কিছু অভিনয়, তাহার মধ্যে প্রবেশ ও তাহার তত্ত্ব উদঘাটন করা অতি সহজ ; যে হেতু যে কোন এক মানবচরিত, তাহা সমগ্র মানবীয় স্বভাবের স্বক্ষ দৃশ্বস্বরূপ। আত্মা এবং মন, তত্ত্বত: সকল মানুষে সমসাধারণ ; সুতরাং আত্মিক এবং মানসিক সংসারে যে প্রবেশলাভে পারক—যে যতখানি পারক হয়, সে সেই পরিমাণে তাবৎ মানবীয় বিষয়ে সৰ্ব্বজ্ঞতা লাভে সক্ষম হইয়া থাকে ।