বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ঘরোয়া.djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

উপরে একটু ডালপাতা দেখা যাচ্ছে, মনে হতে লাগল যেন উঁচু গাছের ডালের সঙ্গে দোলা টানানো হয়েছে। তখন নন্দলালদের হাতেও একটু একটু স্টেজ সাজাবার ভার ছেড়ে দিই, জায়গায় জায়গায় বাৎলে দিই কোথায় কী দিতে হবে আর শেষ টাচটা দিই আমি নিজের হাতে। ঐ শেষ টাচ ঝেড়ে দিতেই আর-এক রূপ খুলে যেত। সেই গল্পই একটা বলি শোনো। এই স্টেজ সাজানো এ কি আর দু-দিনের কথা। কবে থেকে কত এক্স্‌পেরিমেণ্ট করে তবে আজকের এই দাঁড়িয়েছে।

 একবার ‘শারদোৎসবে’ তো ঐ রকম করে স্টেজ সাজানো হল, পিছনে দেওয়া হল নীল বনাতটি, তখন থেকে ঐ নীল বনাতই টানিয়ে দেওয়া হত স্টেজের ব্যাকগ্রাউণ্ডে। প্রকাণ্ড একটা শোলার ছত্র ছিল বেশ ঝিক্‌কিকে আসামের অভ্র দেওয়া। সেইটিই এক পাশে টানিয়ে দেওয়ালুম। বেশ নীল রঙের আকাশের গায়ে ছত্রের রঙটি চমৎকার দেখাতে লাগল। রবিকাকার তেমন পছন্দ হল না; বললেন, রাজছত্র কেন আবার। বেশ পরিষ্কার ঝর্‌ঝরে স্টেজ থাকবে। বলে সেটিকে খুলে দিলেন।

 মনটা খারাপ হয়ে গেল। একদিন ড্রেস রিহার্সেল হবে, কোন্‌ সিনে কোন্‌ লাইট হবে, কোন্‌ লাইট আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাবে, কোন্‌ লাইট আবার ধীরে ধীরে ফুটে উঠবে রথী আর কনক সব লিখে নিলে। সেবারে অভিনয়ে লাইটের উপর বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছিল। এখন, সেই ড্রেস রিহার্সেল হবে, মনটা তো আমার খারাপ হয়ে আছে, শখ করে রাজছত্র টানালুম সেটা পছন্দ হল না কারো। বসে বসে ভাবছি।

 নন্দলালকে বললুম, নন্দলাল, নীল রঙের বনাতের উপরে চাঁদ দিতে হবে।

 নন্দলাল বললে, তা হলে চাঁদ এঁকে দেব কাপড়ের উপরে?

 আমি বললুম, না, চাঁদ আঁকবে কী। সত্যিকার চাঁদ চাই। শরৎকালের আকাশ তাতে প্রতিপদের চাদ চাই আমার।

 নন্দলাল আর ভেবে পায় না।

১৩৩