পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sob छछूका গিয়েছিল। তুমি আজ জ্বালাটা দূর করে দিলে। মনে মনে কতখানি কষ্ট পাচ্ছিলাম। এতদিন ভাল বুঝতে পারিনি, এখন মন শান্ত হয়েছে, এখন বুঝতে পারছি। কোন মেয়ের সংস্পর্শে এলেই আপনা থেকে মনে হত, এও গিরির জাতের জীব, এর মধ্যেও নিশ্চয় খানিকটা গিরির উপাদান আছে। তোমার সম্বন্ধে পর্যন্ত তাই মনে হ’ত। যুক্তি দিয়ে বুঝতাম। অন্য রকম, কিন্তু কিছুতে চিন্তাটা ঠেকাতে পারতাম না। তুমি আজ আমার বিকাবটা কাটিয়ে দিয়েছ সরসী । -একটু দাড়াও রাজুদা, যেও না। কয়েক মিনিট পরে সাধাবণ একটি শাড়ি পরিয়া ক্যান্বিশের জুতা পায়ে দিয়া সরাসী এ ঘরে আসিল । - জোরে জোরে মাইল খানেক হেঁটে আসি চলে। আজ রাতে নইলে ঘুম আসবে না। রাজকুমার ভাবে, কাবো কাছে সে কি কোনদিন কোন অপবাধ করে নাই, পৃথিবী অথবা স্বৰ্গ অথবা নরকবাসী কারো কাছে ?—যে অপরাধের অনুভূতি তাকে যন্ত্রণা দিতে পারে, যাব প্রতিক্রিয়ায় জীবজগতের স্বাভাবিক নিযম অনুসারে কারও উপরে একটু বিদ্বেষের জ্বালা অনুভব করিতে পারে ? রাগ নাই, অভিমান নাই। এবাটি মানুষের উপরেও নয়। জড় বস্তুকেও মানুষ কখনো কখনো হিংসা করে, হেঁচট লাগিলে অন্ধ ক্ৰোধে ইটের উপর পদাঘাত করে, কারাগারের লোহার শিক ভাঙ্গিয়া ফেলিতে চায়। কিন্তু মানুষ নিস্ক্রিয় নিজীবি পুতুল হইলে একটি পুতুলের মুখ তার পছন্দমত নয় বলিয়া যতটুকু বিরক্তি বোধ করা চলিত, তাও সে বোধ করে না। মানুষের মনের অন্ধকার ও দেহের শ্ৰীহীনতার অপরাধ সে ক্ষমা করিয়াছে। মানুষ যে কৃপণ। তাতে তার কিছুই আসিয়া যায় না, কারণ, মানুষের কাছে সে কিছু চায় না ।