পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোশ t রাজকুমার চিন্তিতভাবে বলিয়াছিল-সেটা কি ঠিক হবে সরাসী ? যা বলার। আমার বলাই উচিত, আমার হয়ে তুমি কিছু বলতে গেলে হয়তো ক্ষেপে যাবে। এমনই কি হয়েছে কে জানে, একদিন ফোন পর্যন্ত করল না । যখন তখন ফোনে কথা বলতে পারবে বলে জোর করে আমাকে বাড়িতে ফোন নিইয়েছে। কিছু বুঝতে পারছি না, সরসী। এমন অসহায় নম্রতার সঙ্গে রাজকুমারকে সরসী কোন দিন কথা বলিতে শোনে নাই। ধরা গলার আওয়াজ রাজকুমারকে শোনাইতে না চাওয়ায় কিছুক্ষণ সে কথা বলিতে পারে নাই। --তুমি কিছু ভেবো না, রাজু। তোমার হয়ে মালতীকে বলতে যাব কেন ? যা বলার। আমি নিজে বলব, যা করার আমি নিজেই করব । এসব মেয়েদের কাজ, মেয়েরাই ভাল পারে। আমায় বিশ্বাস কর, আমি বলছি, মালতীর জন্য তোমায় ভাবতে হবে না। মালতী চুপ করে গেছে কেন বুঝতে পার না ? ওর ভয় হয়েছে। -কিসের ভয় ? --তুমি যদি সত্যি সত্যি ওকে নিয়ে কোথাও চলে যেতে চাও? এই ভয় । সেদিন নিজে থেকে তোমায় বলেছিল বটে, এখন কিন্তু ওর ভেতর থেকে উল্টো চাপ আসছে। যেতে বললে যাবে কিন্তু ওর উৎসাহ নিবে গেছে। সেদিন হােটেলের রুমে যেমন বুঝতে পারে নি। হঠাৎ কেন অসুস্থ হয়ে পড়ল, এখনও বেচারী সেইরকম বুঝতে পারছে না কি হয়েছে, অথচ তোমায় একবার ফোন করার সাহসও छCPछ •ा । সরসী মালতীর ভার নেওয়ায় রাজকুমার নিশ্চিন্ত হইয়াছে। নিজের অজ্ঞাতসারেই সরসীর উপর সে নির্ভর করিতে শিখিতেছিল, সব বিষয়ে সরাসীর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা ও পরামর্শ করার প্রেরণাও তার এই মনোভাব হইতে আসিয়াছে। তাকে রিনির প্ৰয়োজন, তাই শুধু উন্মাদিনী রিনির সাহচৰ্য স্বীকার করিয়া সকলের জীবন হইতে নিজেকে দূরে সরাইয়া লইয়াছে, বাদ পড়িয়াছে সরসী।