পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फ्रां* ७३ দেখিয়া শ্যামলের মাথা গরম হইয়া গেল । -আমার কথা শুনে আপনারা অনেকেই ক্ষুন্ন হবেন । আমাকে কয়েকটি অপ্ৰিয় সত্য কথা বলতে হবে । বিশ্বনারী বা মাদ্রাজী মহিলাদের সম্বন্ধে নতুন কিছু আপনাদের শোনাবার জন্য আমি উঠে দাড়াইনি, রাজকুমারীবাবুর বক্তৃতার কয়েকটা মারাত্মক ভুল দেখিয়ে দেওয়া আমার উদ্দেশ্য। ব্যক্তিগতভাবে রাজকুমারবাবুকে আমি শ্রদ্ধা করি, উনি আমার অনেক দিনের বন্ধু রাজকুমারের মুখে আর হাসির চিহ্নও ছিল না। কি সর্বনাশ, এতগুলি লোকের সামনে তাকে অপদস্থ করার জন্য শ্যামল উঠিয়া দাড়াইয়াছে! নিরীহ শান্ত ভালমানুষ শ্যামল ! রাজকুমারের কোন সন্দেহই ছিল না যে সে অনেক ভুল করিয়াছে। এখন তার আতঙ্ক জন্মিয় গেল যে ভুলগুলি নিশ্চয় সাধারণ তুচ্ছ ভুল নয়, শ্যামল চোখে আঙ্গুল দিয়া ভুলগুলি দেখাইয়া দিলে তার আর মাথা উচু করিয়া বসিয়া থাকিবার উপায় থাকিবে না। সাংঘাতিক হাস্যকর ভুল না। হইলে শ্যামল কি সাহস করিয়া মুখ খুলিতে পারিত ? না জানি কি ভাবিবে। সকলে, মনে মনে কত হাসিবে, তার জ্ঞান বুদ্ধি অভিজ্ঞতার খোলসটা যখন শ্যামল ছিড়িয়া ফেলিতে থাকিবো। রাজকুমারের সর্বাঙ্গ ঘামিয়া গেল। এতদিন সে জানিত, তার সম্বন্ধে মানুষ কি ধারণা পোষণ করে সে বিষয়ে তার কিছুমাত্র মাথাব্যথা নাই, এই সমস্ত অল্প বুদ্ধি অগভীর নরনারীর মতামতকে সে গ্ৰন্থও করে না। এক মুহুৰ্ত আগেও সে নিজের কাছে স্বীকার কারিত না বক্তৃতা না জমিলে মন তার খারাপ হইয়া যাইবে । এখন শ্যামলের উদ্যত আঘাতে নিজের বাহাদুরীর প্রাসাদ ভাঙ্গিয়া পড়ার উপক্ৰম করিয়াছে দেখিয়া সে বুঝিতে পারিল, লোকে তাকে কি ভাবে তা কত দামী তার নিজের কাছে । অবজ্ঞার ভয়ে মরণ কামনা করার মত দামী সকলের তাকে বাহাদুর মনে করা। রাজকুমারের অপরিচিত একটি মেয়ে উঠিয়া দাড়াইয়াছিল, দেখিলেই বুঝা যায় সে খাঁটি মাদ্রাজী মেয়ে। আর দশজন মেয়ের মধ্যে বসিয়াছিল