পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যশোমতী

মেজর পুরঞ্জয় ভঞ্জ এম. ডি. আই. এম. এস অনেক কাল হল অবসর নিয়েছেন, রোগী দেখাও এখন ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর বয়স পঁচাত্তর পেরিয়েছে। কলকাতায় নিজের বাড়ি আছে, কিন্তু স্থির হয়ে সেখানে থাকতে পারেন না, বছরের মধ্যে আট-ন মাস বাইরে ঘুরে বেড়ান।

 শীত কাল। পুরঞ্জয় দেরাদুনে এসেছেন, আট-দশ দিন এখানে থাকবেন। রাজপুর রোডে শিবালিক হোটেলে উঠেছেন, সঙ্গে আছে তাঁর পুরনো চাকর বৃন্দাবন। রাত প্রায় আটটা, পুরঞ্জয় তাঁর ঘরে ইজি চেয়ারে বসে একটা বই পড়ছেন। বৃন্দাবন এসে জানাল, এক বুড়ী গিন্নী-মা দেখা করতে চান। পুরঞ্জয় বললেন, আসতে বল তাঁকে।

 যিনি এলেন তিনি খুব ফরসা, একটু মোটা, গাল আর থুতনিতে বলি পড়েছে। মাথায় প্রচুর চুল, কিন্তু প্রায় সবই পেকে গেছে। পরনে সাদা গরদ, সাদা ফ্লনেলের জামা, তার উপর সাদা আলোয়ান। গলবস্ত্র হয়ে প্রণাম করে পুরঞ্জয়ের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইলেন।

 পুরঞ্জয় বললেন, কোথা থেকে আসা হচ্ছে? চিনতে পারছি না তো।

 আগন্তুকা বললেন, আমি যশো, আলীপুরের যশোমতী।

 —সেকি! তুমি যশো, যশেমতী গাঙ্গুলী, কি আশ্চর্য!

 —গাঙ্গুলী আগে ছিলাম, এখন মুখজ্যে।

 —ও, তোমার স্বামী মুখজ্যে। তোমাকে দেখে চমকে গেছি,