ষ্টেডের শারীর লক্ষণ ও মনের প্রকৃতি
ইংরেজপ্রকৃতির এই সহজ ও বিশেষ ধর্ম্মগুলি ষ্টেডের মধ্যে অতি আশ্চর্য্যরূপে ফুটিয়া উঠিয়াছিল। আমরা যে সকল প্রসিদ্ধ ইংরেজের চেহারা দেখিয়াছি, তার কোথাও ইংরেজের ইংরেজত্বটী এমনভাবে প্রকাশিত হইয়াছে বলিয়া মনে পড়ে না। গ্ল্যাডষ্টোন্ কি মর্লে, টেনিসন্ কি মরিস্, হ্যারিসন্ কি স্পেন্সার, এঁদের সকলের চেহারাতেই এমন কিছু না কিছু চাঁছা-ছোলার, কাটাকুঁদার ভাব ছিল, যে ভাব খাঁটি ইংরেজের চেহারায় নাই। খাঁটি ইংরেজের চেহারা ঢালাই জিনিষ, খোদাই জিনিষ নহে। এ চেহারা অনেকটা সাদাসিধে, অনেকটা মোটাশোটা, অনেকটা স্থূল। ষ্টেডের চেহারাও ঢালাই ছিল, খোদাই ছিল না। তাহাও অনেকটা সাদাসিধে, অনেকটা মোটাশোটা, অনেকটা স্থূল ছিল। ষ্টেড্কে দেখিয়া মনে হইত, বিধাতাপুরুষ যে বিশেষ ছাঁচে প্রথমে ইংরেজকে গড়িয়াছিলেন বহুদিন পরে বুঝি সেই ছাঁচটাকে ধুইয়া মুছিয়া, ঘষিয়া মাজিয়া, আবার যেন তাহাতেই আমাদের এ কালে স্টেড্কে ঢালাই করিয়া পাঠাইয়াছেন। ষ্টেডের মাথাটা বড় ছিল। আর সেই বড় ও সুগোল মস্তকের ঘননিবিড় কেশরাশি তাঁর ভিতরকার ভাবপ্রবণতার পরিচয় প্রদান করিত। অতিশয় ভাবপ্রবণ লোকে একটু লঘুচিত্ত, একটু চঞ্চল, একটু নিষ্ঠাহীন হইয়াই থাকে। কি আইরিশ্, কি স্পেনীয়, কি ফরাসীস্, কি ইতালীয়,—য়ুরোপের ভাবপ্রবণ লোকেরা সকলেই স্বল্পবিস্তর লঘুচিত্ত ও চঞ্চল ও নিষ্ঠাহীন বলিয়া প্রসিদ্ধ। ইংরেজের চরিত্রে এ লঘুচিত্ততা, এ চাঞ্চল্য, এ নিষ্ঠাহীনতা নাই বলিলেই হয়। স্টেডের আন্তরিক ভাবপ্রবণতার মধ্যেও এরূপ লঘুচিত্ততা বা চাঞ্চল্য বা নিষ্ঠাহীনতা ছিল না। তাঁর সুগঠিত মস্তকের নিবিড় কেশরাশি যেমন তাঁর ভাবপ্রবণতার পরিচয় দান করিত, তেমনি আবার তাঁর প্রশস্ত ললাট, উন্নত কপোল, অপেক্ষাকৃত স্থূল