সাত
তারপর দিন দুই কেটে গেল। ওরা ক্রমশঃ গভীর থেকে গভীরতর জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করলে। পথ কোথাও সমতল নয়, কেবল চড়াই আর উৎরাই, মাঝে মাঝে কর্কশ ও দীর্ঘ টুসক ঘাসের বন, জল প্রায় দুষ্প্রাপ্য, ঝরণা এক আধটা যদিও বা দেখা যায়, আল্ভারেজ্ তাদের জল ছুঁতেও দেয় না। দিব্যি স্ফটিকের মত নির্ম্মল জল পড়চে ঝরণা বেয়ে, সুশীতল ও লোভনীয়, তৃষ্ণার্ত্ত লোকের পক্ষে সে লোভ সম্বরণ করা বড়ই কঠিন—কিন্তু আল্ভারেজ জলের বদলে ঠাণ্ডা চা খাওয়াবে তবুও জল খেতে দেবে না। জলের তৃষ্ণা ঠাণ্ডা চায়ে দূর হয় না, তৃষ্ণার কষ্টই সব চেয়ে বেশী কষ্ট বলে মনে হচ্ছিল শঙ্করের। একস্থানে টুসক্ ঘাসের বন বেজায় ঘন। তার ওপরে চারিধার ঘিরে সেদিন কুয়াসাও খুব গভীর। হঠাৎ বেলা উঠলে নীচের কুয়াসা সরে গেল—সামনে চেয়ে শঙ্করের মনে হোল, খুব বড় একটা চড়াই তাদের পথ আগলে দাঁড়িয়ে, কত উঁচু সেটা তা জানা সম্ভব নয়, কারণ নিবিড় কুয়াসা কিংবা মেঘে তার ওপরের দিকটা সম্পূর্ণরূপে আবৃত। আল্ভারেজ বল্লে—রিখ্টারস্ভেল্ডের আসল রেঞ্জ্।
শঙ্কর বল্লে—এটা পার হওয়া কি দরকার?
আল্ভারেজ বল্লে—এইজন্যে দরকার যে সেবার আমি আর জিম দক্ষিণ দিক থেকে এসেছিলুম এই পর্ব্বতশ্রেণীর পাদমূলে কিন্তু আসল রেঞ্জ পার হইনি। যে নদীর ধারে হলদে হীরে