পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগর চরিত GS যিনি ভুরিভুরি স্বাৰ্থত্যাগ করিয়াছেন, যিনি স্বার্থের অনুরোধে আপন মহোচ্চ আত্মসম্মানকে মুহুর্তের জন্য তিলমাত্র অবনত হইতে দেন নাই, যিনি আপনার ন্যায়সঙ্কল্পের ঋজুরেখা হইতে কোনো মন্ত্রণায়, কোনো প্রলোভনে দক্ষিণে-বামে কেশাগ্ৰপরিমাণ হেলিতে চাহেন নাই, তিনি কিরূপ প্রশস্তবুদ্ধি এবং দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞার বলে সঙ্গতিসম্পন্ন হইয়া সহস্রের আশ্রয়দাতা হইয়াছিলেন। গিরিশৃঙ্গের দেবদারুদ্রুম যেমন শুষ্ক শিলাস্তরের মধ্যে অঙ্কুরিত হইয়া, প্ৰাণঘাতক হিমানীবৃষ্টি শিরোধাৰ্য্য করিয়া, নিজের আভ্যন্তরীণ কঠিনশক্তির দ্বারা আপনাকে প্রচুর সরসশাখাপল্লবসম্পন্ন नद्भलभश्भिाव्र अचत्डौ कब्रिघ्र। डूप्ल-0ऊभूमि qछे ব্রাহ্মণতনয় জন্মদারিদ্র্য এবং সর্বপ্রকার প্রতিকূলতার মধ্যেও কেবল নিজের মজ্জাগত অপৰ্য্যাপ্ত বলবুদ্ধির দ্বারা নিজেকে যেন অনায়াসেই এমন সরল, এমন প্রবল, এমন সমুন্নত, এমন সর্বসম্পংশালী করিয়া তুলিয়াছিলেন। মেট্ৰপলিটান-বিদ্যালয়কে তিনি যে একাকী সর্বপ্রকার বিস্ত্রবিপত্তি হইতে রক্ষা করিয়া তাহাকে সগৌরবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত সংযুক্ত করিয়া দিলেন-ইহাতে বিদ্যাসাগরের কেবল লোকহিতৈষী ও অধ্যবসায় নহে, তাহার সজাগ ও সহজ কৰ্ম্মবুদ্ধি প্ৰকাশ পায়। এই বুদ্ধিই যথার্থ পুরুষের বুদ্ধি,—এই বুদ্ধি সুদূরসম্ভবপর কাল্পনিক বাধাবিত্ন ও ফলাফলের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিচারজালের দ্বারা আপনাকে নিরুপায় অকৰ্ম্মণ্যতার মধ্যে জড়ীভূত করিয়া বসে না ; এই বুদ্ধি, কেবল সূক্ষ্মভাবে নহে, প্ৰত্যুত প্ৰশস্তভাবে, সমগ্রভাবে কৰ্ম্ম ও কৰ্ম্মক্ষেত্রের আদ্যোপান্ত দেখিয়া লইয়া, দ্বিধা বিসর্জন দিয়া, মুহুর্তের মধ্যে উপস্থিত বাধার মৰ্ম্মস্থল আক্রমণ করিয়া, বীরের মতো কাজ করিয়া যায়। এই সবল কৰ্ম্মবুদ্ধি বাঙালীর মধ্যে বিরল। যেমন কৰ্ম্মবুদ্ধি, তেমনি ধৰ্ম্মবুদ্ধির মধ্যেও একটা সবল কাণ্ডজ্ঞান থাকিলে, তাহার দ্বারা যথাৰ্থ কাজ পাওয়া যায়। কবি বলিয়াছেন—