বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গামলাগুলো দেখছ, ও আমি আমার যজ্ঞের রান্নায় ব্যবহার করিনে; ওগুলোতে রং গোলা হয়। কাপড়গুলো তুলে রেখে যায় ওই বাক্সের ভিতর, তাছাড়া ওতে আছে বস্‌তির মেয়েদের প্রসাধনযোগ্য নানা জিনিস; —বেলোয়ারি চুড়ি চিরুনি ছোটো আয়না পিতলের বাজু। রক্ষা করবার ভার আমার উপর আর প্রেতাত্মার উপর। বেলা তিনটের সময় সওদা করতে বেরোয়, এখানে আর ফেরে না। কলকাতায় মাড়োয়ারি জানিনে কিসের দালালি করে। আমার ইংরেজি জানার লোভে আমাকে অংশীদার করতে চেয়েছিল, জীবের প্রতি দয়া করে রাজি হইনি। আমার আর্থিক অবস্থারও সন্ধান নেবার চেষ্টা ছিল, বুঝিয়ে দিয়েছি পূর্বপুরুষদের ঘরে যা ছিল মজুত আজ তারই চোদ্দ আনা ওদেরই পূর্বপুরুষের ঘরে জন্মান্তরিত।”

 “এখানে তোমার মেয়াদ কতদিনের?”

 “আন্দাজ করছি চব্বিশ ঘণ্টা। ওই আঙিনায় রসেবিগলিত নানা রঙের লীলা সমানে চলবে দিনের পর দিন, অতীন্দ্র বিলীন হয়ে যাবে পাণ্ডুবর্ণ দূরদিগন্তে। আমার ছোঁয়াচ লেগেছে যে-মাড়োয়ারিকে তাকে বেড়িপরা মহামারিতে না পায় এই আমি কামনা করি। এখনও বিনা মূলধনে আমার ভাগ্যভাগী হবার সম্ভাবনা যে তার নেই তা বলতে পারিনে।”

৯২