পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খুব ভাল আছে তা বলতে পারব না, অথচ এত বেশি খারাপ হয় নি যাতে আচল হয়ে ওঠে— এই কারণে, কৰ্ত্তব্য কৰ্ম্ম ত করতেই হয়, তার পরে কৰ্ত্তব্য কৰ্ম্মের অতিরিক্ত যে সব কাজের ভিড় চারদিকে চেপে ধরে তাদের দূরে ঠেকিয়ে রাখবার উপযুক্ত কোনো ছুতো খুঁজে পাইনে। এই পর্যন্ত তোমাকে লিখেচি হেনকালে চীন দেশ থেকে একজন ভদ্রলোক আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। তিনি বল্লেন, “চীনদেশে আপনাকে যেতেই হবে, সেখানকার যুবকেরা আপনার জন্যে অপেক্ষা করচে।” অক্টোবর নবেম্বর ডিসেম্বর এই তিনমাস উত্তর চীন এবং দক্ষিণ চীন ভ্রমণ করবার জন্যে আমাকে বিশেষ অনুরোধ করে তিনি চলে গেলেন। তারপরে এলেন Cinema কোম্পানির এক কৰ্ম্মচারী। আমার “রাজর্ষি" ওরা সিনেমাতে প্রকাশ করবার উদ্যোগ করেচে। সেই উপলক্ষ্যে আমারও একখানা সিনেমা ছবি নিতে চায়। অনেক বক্তৃতার পর সে যখন চলে গেল— তখন এলেন এক ভদ্রলোক, তিনি ভারত মন্ত্রিসভায় সদস্যরূপে প্রবেশ করতে ইচ্ছুক, আমার কাছে ভোট দাবী করেন। তিনি যেতে না যেতে All India Musical Conference-এর উদ্যোগকৰ্ত্তারা এসে উপস্থিত। এই সভার কার্য্যপ্রণালী কি রকম হওয়া উচিত সেই সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে আমার পরামর্শ নেওয়া তাদের অভিপ্রায়। সুদীর্ঘকাল তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমার আহার প্রস্তুত শুনে তারা চলে গেলেন। সেই আহারকালেও একজন আর্টিস্ট ভদ্রলোক বিশ্বভারতীর উদ্দেশ্য উপকরণ কাৰ্য্যপ্রণালী তার আয়ব্যয় প্রভৃতি সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ সুরু করে দিলেন। আমার আহার শেষ হল তবু তার প্রশ্ন হলনা। রাত্রি সাড়ে নটা পৰ্যন্তবকবিকির পর তিনি বিদায় হলেন। আজ সকালে আবার তোমার চিঠি আরম্ভ করলুম। দুই তিন দিন থেকে এখানে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। কাল রাত্তিরে টিপটপ করে বৃষ্টি হয়েচে। আজ সকালেও মেঘেতে কুয়াশাতে অন্ধকার, আকাশটা যেন কম্বলমুড়ি দিয়ে আছে। শীতের দিনে এ রকম বাদলা একটুও ভাল লাগেনা। ९०९